শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এ দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সমানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবেন তারা। সরকারিকরণের দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচি লাগাতার চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
আরো পড়ুন: স্কুল-কলেজে সভাপতি পদে নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ!
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট নামের একটি মোর্চার ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। দল-মত নির্বিশেষে সরকারিকরণ প্রত্যাশী সব শিক্ষককে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। মহাজোট নেতারা প্রতিটি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারীকে অবস্থান কর্মসূচিতে পাঠাতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আহ্বান জানিয়েছেন। মহাজোটের আহ্বায়ক মো. মাঈন উদ্দিন ও সদস্য সচিব মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, ২০১৮ সালে এমপিওভুক্ত শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২০ দিন অবস্থান ও অনশন কর্মসূচির পর সরকার তিনজন সচিব পাঠিয়ে শিক্ষকদের অনশন ভাঙায়। তখন সরকারি ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতার আশ্বাস দিয়েছিলো যা বাস্তবায়ন হয়েছে। আমরা আশ্বস্ত ছিলাম বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার পরবর্তী মেয়াদে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করবেন। আমাদের বিশ্বাস ছিলো মুজিব বর্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণের মাধ্যমে বৈষম্যের অবসান হবে। বৈষম্য নিরসনের দাবিতে বারবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত সরকারিকরণের দাবি পূরণ না হওয়ায় এখন ২০১৮ সালের মতো লাগাতার কর্মসূচির বিকল্প নেই।
তারা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষাকে সরকারিকরণ করলে বেশি লাভবান হবে সরকার ও শিক্ষার্থী। বৈষম্যহীনভাবে শিক্ষার্থীরা একই মানের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বল্প খরচে পড়ালেখা করবে এই কৃতিত্বের অধিকারী হবে বর্তমান সরকার। সরকার উপজেলা পর্যায়ে একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করায় শহর ও নগরে স্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা স্বল্প খরচে পড়ালেখা করছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সন্তানরা বেশি খরচে পড়ালেখা করছে। প্রধানমন্ত্রী গত নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, গ্রাম হবে শহর। গ্রামকে শহরে পরিণত করতে গেলে প্রথমেই গ্রামের মানুষকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে, যার একমাত্র উপায় হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণ করা। সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাচ্ছে। স্মার্ট দেশ গড়তে এদেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে আলোকিত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে এবং মেধাবীদের শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করতে হবে। তাই এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়।
মহাজোটের আহ্বায়ক মো. মাঈন উদ্দিন ও সদস্য সচিব মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মূল একটি স্লোগান হলো-‘সংগঠন যার যার জাতীয়করণ সবার’। তাই দলমত নির্বিশেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে সবাইকে অংশগ্রহণ আহ্বান জানাচ্ছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা অবস্থায় আন্দোলন চলাকালীন প্রতিদিন প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ৩ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারীকে পাঠিয়ে কর্মসূচিকে বেগবান করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিশেষভাবে অনুরোধ করেছি।’
মহাজোটের যুগ্ম সদস্য সচিব মো. মেজবাহুল ইসলাম প্রিন্স সর্বস্তরের শিক্ষকদের দল-মত নির্বিশেষে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’