: সবারই জানা নির্বাচক ও হেড কোচ হাথুরুসিংহে মিলে যে দলটি সাজান, তাতে চূড়ান্ত অনুমোদন লাগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের। এমন নয় যে, বিসিবি সভাপতি পাপন দল চূড়ান্ত করার পর নিজ ক্ষমতা বলে অনুমোদন দেন। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের রীতি, নিয়মও। দীর্ঘদিন চলে আসছে এ ধারা। তিন সদস্যের নির্বাচক কমিটি তাদের খেলোয়াড় তালিকা জমা দেন বোর্ডে। তা সবার আগে যায় ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যানের কাছে। ক্রিকেট অপারেশন্সের মাধ্যমেই, দল চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য চলে যায় বিসিবি প্রধানের কাছে।
কখনো কখনো চূড়ান্ত অনুমদনটা বিসিবি সভাপতি বোর্ডে বসেই দেন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দল অনুমোদন পায় মেইলের মাধ্যমে। এবার দীর্ঘ দিনের ধারার ব্যতিক্রম ঘটছে। যতদূর জানা গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দল চূড়ান্ত হবে বিসিবি বিগ বস নাজমুল হাসান পাপনের গুলশানের বাসায়। নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, দল অনুমোদনের জন্য বিসিবি সভাপতির বাসায় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান আকরাম খান, ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন ও বোর্ড পরিচালক আই এইচ মল্লিক। বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের এক সূত্র নিশ্চিত করেছেন পাপনের বাসাতেই দল চূড়ান্ত হবে। এখন চলছে সেই দল নির্বাচনী সভা। সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো আজ (শনিবার) সন্ধ্যা নাগাদ ঘোষিত হয়ে যেতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষের টেস্ট দল।
এই দল নিয়ে এরই মধ্যে নানা গুঞ্জন ও জল্পনা কল্পনা। বোর্ড সভাপতি আগের দিন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ‘কিপার মুশফিক’ ও তার ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে সময়ালচনা করেন। পাপন বলেন, ‘মুশফিক কিপিং করবে কী করবে না, কত নম্বরে ব্যাটিং করবে সেটা তার ব্যাপার।’
যদিও গত পরশু চট্টগ্রামে টেস্ট শেষ হবার পর মুশফিক বলেছেন অন্য কথা। জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক বলেন, আমার কিপিং ও ব্যাটিং অর্ডার কী হবে তা উপরের কর্তাদের কাছে জিজ্ঞেস করুন। বোঝাই গেল মুশফিক, কোচ ও পাপনের দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। পাপন তার জবাব দিতে গিয়ে আকার ইঙ্গিতে মুশফিককে একহাত নিয়ে ছেড়েছেন।
পাপন বলেন, মাশরাফি কিংবা সাকিব ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দল পরিচালনা করতে গিয়ে কখনো এমন কথা বলেনি। বোর্ড সভাপতির এমন মন্তব্যে পরিষ্কার তিনি মুশফিকের উপর অসন্তুষ্ট। এই অসন্তুষ্টির পরিনাম কী হবে? মুশফিকের অধিনায়ক্ব থাকবে কী থাকবে না, তা নিয়েই বিস্তর জল্পনা কল্পনা। তবে ধারণা করা হচ্ছে যেহেতু সময় কম, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই (১৮ সেপ্টেম্বর) দল দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যাবে, ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম টেস্ট, তার আগে অধিনায়ক বদলের সম্ভাবনা কম।
তবে কিপার মুশফিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তাকে কিপিং করতে দেখা নাও যেতে পারে। মুশফিক কিপিং না করলে বিকল্প একজনকে কিপিং করতেই হবে। বাংলাদেশ দলের যে গঠন বিন্যাস তাতে শুধু স্পেশালিষ্ট কিপারের টেস্ট দলে থাকার সম্ভাবনা খুব কম। তাই মুশফিক ইপিং না করলে লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান ও আনামুল বিজয়ের একজনকে গ্লাভস হাতে দেখা যেতে পারে।
যেহেতু টপ অর্ডার হঠাৎ নরবরে, তামিম ছাড়া দুই ও তিন নম্বরে সৌম্য, ইমরুল দুইজনেই অপ ফর্মে, চার নম্বরও স্থির নয়, তাই এনামুল হক বিজয়ের কথা উঠে এসেছে। যদিও প্রধান নির্বাচক জোড় দিয়ে জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট ও বাউন্স উইকেটে অনভিজ্ঞ কাউকে বিবেচনায় আনতে চান না তারা। দ্রুত গতির উইকেটে তুলনামূলক সাবলীল সৌম্যের দলে থাকা নিশ্চিত। ইমরুলের জায়গায় নতুন কাউকে নেয়া যায় কী না সে চিন্তা চলছে। তবে অভিজ্ঞতার বিচারে ইমরুল টিকে যেতে পারেন। আর যদি ইমরুল বাদ পড়েন তাহলেই কেবল বিজয়ের সম্ভাবনা থাকবে।
এদিকে এইচপির হয়ে ইংল্যান্ড সফরে এরই মধ্যে দুই সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্তর কথাও ভাবা হচ্ছে। এই তরুণ দলে জায়গা পেলে অবাক হবার কিছু থাকবে না। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার দল থেকে অনিবার্যভাবেই বাদ পড়ছেন নাসির হোসেন।