সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটুনির শিকার হয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা।
শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাসের গ্রন্থাগারের সামনে এই হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন আন্দোলনকারীরা। তবে এই বিষয়ে সরকার সমর্থক সংগঠনটির কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছে একদল শিক্ষার্থী।
তাদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ‘ঘোষণা’ দিলেও সরকারি প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে আন্দোলনকারী পরিষদের নেতারা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনের জন্য জড়ো হন।
পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান ও নূরুল হক নূর সেখানে ছিলেন। ওই সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী এসে তাদের উপর হামলা চালান বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।
মারধরের এক পর্যায়ে হাসান আল মামুন ও ফারুক হাসান ওই স্থান থেকে সরে পড়েন। তবে নূরকে মাটিতে ফেলে বেদম পেটাতে দেখা যায়।
গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের আরেক নেতা পরিষদের সূর্যসেন হল শাখার আহ্বায়ক আরশ গ্রন্থাগার থেকে বের হলে তাকেও মারধর করা হয়। মাটিতে ফেলে উপর্যুপরি লাথি মারা হয় তাকে।
আরশকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের কেউ গ্রন্থাগারের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছে কি না, তা দেখতে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ভেতরে ঢুকলেও তাদের বের করে দেন গ্রন্থাগারের পরিচালক অধ্যাপক জাভেদ আহমেদ।
নূরকে মারার সময় ঠেকাতে গিয়ে অধ্যাপক জাভেদ আহমেদও আঘাত পান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় কিছু বলতে চাননি তিনি।
হাসান আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১০টা ৪৫ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, এ সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের কয়েকশ নেতা কর্মী আমার, নূর ও ফারুকীর উপর হামলা করে।
“এক পর্যায়ে আমি ও ফারুক সেখান থেকে সরে গিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছিলাম। নূরকে এত বেশি মারধোর করা হয়েছে যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। নূরের অবস্থা সংকটাপন্ন।”
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি মেহেদী হাসান রনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়েছেন। এরপরও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট এবং দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নানা সময়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় ও দেশকে স্থিতিশীল রাখতে যা কিছু করা দরকার ছাত্রলীগ তা ই করবে।”