ডাঃ দাসঃ ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ। তাই বর্ষা মওসুমে এর প্রাদুর্ভাবও বেশি। সব বয়সের মানুষের এটা হতে পারে। তবে শিশুদের জন্য এটি একটি বিশেষ গুরুতর সমস্যা। আমাদের দেশে শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি। ডায়রিয়া এবং এর পরিণতি হিসেবে সৃষ্ট অপুষ্টি ও অন্যান্য রোগ এর জন্য অনেকাংশে দায়ী।
ডায়রিয়া হলে কী করবেন?
১। পানিস্বল্পতা যাতে না হয় সেজন্য শিশুকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তরল খাবার দিন। ডায়রিয়ার ফলে শরীর থেকে যতটুকু পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় ঠিক এতটুকু পানি ও লবণ যদি সময়মতো পূরণ করা হয় তাহলে ডায়রিয়াজনিত পানিস্বল্পতার কারণে মৃত্যু ঘটে না।
• যেসব তরল খাওয়ানো যেতে পারে : (১) খাবার স্যালাইন, (২) লবণ-চিনি বা গুড়ের শরবত, (৩) ডাবের পানি কিংবা শুধু পানি, (৪) চিড়ার পানি, (৫) ভাতের মাড়, (৬) খাবার পানি।ডায়রিয়া বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তরল খাবার চালিয়ে যেতে হবে।
২। অপুষ্টি যাতে না হয় সেজন্য শিশুকে প্রচুর খাবার দিতে হবে। বুকের দুধ চালিয়ে যেতে হবে এবং ঘন ঘন খাওয়াতে হবে। শিশু অন্য দুধে অভ্যস্ত হলে তাই খাওয়াতে হবে এবং কমপক্ষে প্রতি ৩ ঘণ্টা অন্তর খাওয়াতে হবে।
টাটকা খাবার : যে বয়সের জন্য যে খাবার স্বাভাবিক তাই খাওয়াতে হবে।
• উপযোগী খাবার : ভাত, ডাল, শাকসবজি, ডিম, মাছ, গোশত অথবা এসবের খিচুড়ি। খাবারের সাথে এক বা দুই চা চামচ তেল দিতে হবে।
• টাটকা ফলের রস, কলা বা পেঁপে চটকিয়ে দিতে হবে। ৩-৪ ঘণ্টা পরপর দিনে অন্তত ছয়বার খেতে দিতে হবে। খুব ছোট শিশুদের আরো বেশি খেতে দিতে হবে। শিশু যতটা খেতে চায় ততটা খাওয়ার জন্য তাকে উৎসাহিত করতে হবে।
• খাবার নরম করে রান্না করতে হবে যাতে সহজে হজম হয়।
• ডায়রিয়া বন্ধ হওয়ার পর শিশুকে প্রথম দুই সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন একবার করে অতিরিক্ত খাবার দিতে হবে। যত দিন না শিশু তার আগের অবস্থা ফিরে পায়।
ডায়রিয়া দেখা দিলে শিশুকে লক্ষন অনুযায়ী ভাল হোমিও ঔষধ যেমন [Ars],Veratrum album, Cinchona officinalis,Sulphur.Aloes ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩। নিচের লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি দেখা দিলে শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
(১) কয়েকবার পাতলা পায়খানা, (২) বারবার বমি, (৩) জ্বর, (৪) অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত (৫) খাদ্য বা পানীয় গ্রহণে অনীহা, (৬) পায়খানায় রক্ত, (৭) চোখ বসে গেলে, (৮) যদি তিন দিনের মধ্যেও অবস্থার উন্নতি না হয়।
Dr D.K.Das
M.Sc,DHMS(Dhaka)Homeo
01811898061