নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ মে, ২০২১
টানা ১৪ মাস ধরে বন্ধ থাকা সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে কিনা, তা আজ বুধবার জানা যাবে। পাশাপাশি এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আজ দুপুর ১২টায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের জানাবেন।
করোনা পরিস্থিতিতে আগামী ২৯ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা থাকলেও চলমান লকডাউনের সময়সীমা ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। এ কারণে স্কুল-কলেজের ছুটি আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে। করোনা-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আজ জানিয়ে দেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, সরকার চেয়েছিল করোনা সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এলে স্কুল-কলেজ খুলে দিতে। এ অবস্থা এখনও আসেনি। অন্যদিকে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া না হলে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হবে।
সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে তারা আন্দোলনেও নেমেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবিসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় স্কুল-কলেজ খুলতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, আগামী জুন মাস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর আগে নতুন করে আরও এক সপ্তাহ ছুটি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে যদি লকডাউন তুলে দেওয়া হয় তাহলে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি শুরু হবে। জুন মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সপ্তাহে ছয় দিন তাদের ক্লাস নেওয়া হবে। অন্য স্তরের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে অফলাইনে একদিন ক্লাস নেওয়া হবে। এছাড়া অনলাইনে চলবে নিয়মিত ক্লাস।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে গত সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। তারা অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া না হলে বড় ধরনের আন্দোলনের হুমকি দেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। গতকাল মঙ্গলবার ঢাবি ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত সকল সিদ্ধান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলের দাবির ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবগত আছে। এ মুহূর্তে কী করণীয়, তা দ্রুতই জানানো হবে।
বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান করোনাকালে শিক্ষার ক্ষতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি একটি জরিপ পরিচালনা করে। এর মধ্যে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) যৌথ গবেষণা জরিপের ফলাফলে বলা হয়, দেশের ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেছেন, স্কুল খুললে তারা সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন। আর মাধ্যমিকের ৯৬ শতাংশ অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।