মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১১ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকেরা। এবার শিক্ষকরা দাবি করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা জাতীয়করণ হলে সরকারের এক টাকাও বাড়তি খরচ হবে না। বর্তমানে এমপিও হিসাবে দেওয়া অনুদানের অর্থেই ব্যয় সংকুলান হবে। এর সঙ্গে কেবল প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় যোগ করতে হবে। এই দুই অর্থ মিলিয়ে শিক্ষকের বেতনভাতা সবই দেওয়া যাবে। এরপরও বছরে অন্তত দেড়শ কোটি টাকার মতো সরকারের তহবিলে জমা থেকে যাবে।
সোমবার (১৭ জুলাই) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। এর আগে এদিন বিকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে শিক্ষক নেতারা। বৈঠকে নিজেদের দাবি দাওয়া তুলে ধরেন তারা।
মাউশি ডিজির সাথে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওসার আহমেদ বলেন, মাউশি ডিজির কাছে আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। মাউশি ডিজিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কথা শুনেছেন। তারা আমাদের দাবি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ক্লাস বন্ধ করতে চাই না। আমরা ক্লাসে তালা দেওয়ার আগে আমাদের দাবি নিয়ে প্রেসক্লাবে এসেছি। আমরা শিক্ষা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। তবে আমাদের কথা কেউ শোনেনি। সেজন্য আমরা বাধ্য হয়ে ক্লাস বন্ধ করে আন্দোলনে এসেছি। জাতীয়করণের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে। আমরা প্রেসক্লাব ছেড়ে যাব না।
শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, যত দিন পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা না আসবে, তত দিন পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। হয়তো কর্মসূচিতে ভিন্নতা আসবে। যেমন ১১ জুলাই থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিদ্যালয়ে তালা বন্ধ করে এ কর্মসূচি চলছে। দাবি পূরণের ঘোষণা না এলে সামনে আমরণ অনশনসহ আরও বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: দাবি আদায় না হলে চিকিৎসকদের নতুন কর্মসূচি
এদিকে, আন্দোলনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সোমবার (১৭ জুলাই) তারা সপ্তম দিনের মত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। কিন্তু দুপুর ১ টার দিকে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়েছেন।
বর্তমানে সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ২০ হাজারের বেশি। এর মধ্যে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬৮৪টি, বাকিগুলো বেসরকারি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যমিকে মোট শিক্ষার্থী ১ কোটি ১ লাখ ৯০ হাজার ২২। মোট শিক্ষক আছেন পৌনে তিন লাখের মতো।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অধিকাংশই এমপিওভুক্ত। এর মানে হলো এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে বেতনের মূল অংশসহ কিছু ভাতা পান। দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।