ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস আরার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। বসত-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, হামলা-মামলা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই শিক্ষা অফিসারের মা।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল ১১টায় শহরের আরাপপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন নির্যাতিতা ওই মা। প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে। এ ছাড়া সাধারণ ডায়েরি করেছেন শৈলকুপা থানায়।
ফেরদৌস আরা
আরো পড়ুন: প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি শৈলকুপার ফাজিলপুর গ্রামের মৃত আবুবকর সিদ্দীকির স্ত্রী হাজি আনজুমান আরা খানম। আমার স্বামী ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করলে আমার দুই মেয়ে ফেরদৌস আরা (১২) এবং জাফরিন আরা (৮) কে অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে এমনকি জমি বিক্রি করে লেখা পড়া শিখিয়ে বড় করেছি। এর মধ্যে বড় মেয়ে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করে ও তাকে ভালো পাত্র দেখে বিয়েও দেই।
কিন্তু সেখানে তার সংসার ভেঙে যায়। পরে আবারও অনেক টাকা খরচ করে দ্বিতীয়বার বিয়ে দেই। ছোট মেয়েও বিয়ের পর তার নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে বর্তমানে আমি একা অসহায় জীবনযাপন করছি। দেখার কেউ নেই। এরই মধ্যে দুই মেয়ে তার বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ মাঠের জমা-জমি বিক্রি করে নিয়ে গেছে। বর্তমানে আমার অংশের ভিটা জমিতে একটি বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে ভাড়া দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই আমার ওষুধ খরচসহ সংসার চলে।
এসময় তিনি বলেন, আমি একজন হার্টের রোগী। এরই মধ্যে বড় মেয়ে এবং জামাই এসে আমার ঘরের ভাড়াটিয়াদের বের করে দিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেয় এবং ঘরবাড়ি তার নামে লিখে দিতে অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করে। এমনকি আমার নামে আদালতে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা পর্যন্ত দায়ের করেছে। সংবাদ সম্মেলনে ছোট মেয়ে জাফরিন আরা উপস্থিত থেকে তার বড় বোনের অত্যাচার নির্যাতন, হুমকি-ধমকি, ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ, জবরদখল এবং কুৎসা রটানোর বিষয়টি তুলে ধরেন।
এদিকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে শৈলকুপা ইউএনও ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফেরদৌস আরার কাছে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।