ভুয়া বিজ্ঞাপনে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্যের ফাঁদ পেতেছে এনআইটি নামে এক ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি মাঝারি মানের এক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে তারা লিখেছে, ‘আরো জানতে অদ্য রবিবারের দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও প্রথম আলো দেখুন।’
কিন্তু ওই দিন ওই পত্রিকা দুটিতে এ বিষয়ক কোনো বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়নি। তাই এ জাতীয় ঘোষণাকে শিক্ষার্থী টানার স্ট্যান্টবাজি বলেই ধরে নেওয়া যাচ্ছে। উপরন্তু, বিজ্ঞাপনটির নিচে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. আশরাফ আলী ভুঁইয়ার নাম রয়েছে। তবে তার নামের পাশে লেখা বিএসসি (অনার্স) ও এমএমসি ডিগ্রি দুটি রুচিকর বলে মনে হয় না।
বিজ্ঞাপনটির শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের লক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন কল্পে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা পূরণের লক্ষে এনআইটি এর কারিগরি দকি নির্দেশনায় বিপুল জনসমষ্টিকে দক্ষ স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ২০২৩-২০২৪ সেশনে নিম্নবর্ণিত কোর্সসমূহে ভর্তির জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্ধারিত ফরমে দরখাস্ত আহ্বান করা যাচ্ছে।’
বিজ্ঞাপনটিতে কম্পিউটার বিভাগের ১৮টি ও মেডিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের ১৫টি ছাড়াও ফ্যাশন ডিজাইন, লাইব্রেরি সায়েন্স, সেক্রেটারিয়েল সায়েন্স, সেলাই, ব্লক-বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, মোবাইল, ফ্রিজ, এসি, ওয়েল্ডিং, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগে ভর্তি নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। আগ্রহীদের ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে ২০ টাকার বিনিময়ে ভর্তি নির্দেশিকা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপনে চটকদারিত্ব আরো বাড়িয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংক ঋণ পাওয়ার নিয়মাবলী ভর্তি নির্দেশকায় পাওয়া যাবে। বাসায় বসে আয় করার জন্য আমদানিকৃত মূল্যে কম্পিউটার বিতরণ প্রজেক্টের প্রলোভনও পাতা হয়েছে বিজ্ঞাপনটিতে। আরো বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ শেষে সরকার অনুমোদিত সনদ প্রদান করা হবে।
এছাড়াও বিজ্ঞাপনটিতে প্রতিষ্ঠানটির বিভাগীয় ও আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তালিকায় নাম রয়েছে- মিরপুর, সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, বরিশাল, সিলেট, বগুড়া, রংপুর ও যশোরের। প্রধান কার্যালয় হিসেবে রয়েছে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি ভবনের ঠিকানা।
প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষাসেবার নামে বাণিজ্য জমাতেই অগোছালো বক্তব্য ও ভুল বানানে ভরা বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।