মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। শিক্ষার্থীদের লটারির মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রদান করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা সরকারি স্কুলে আবেদন করে থাকে। গুটি কয়েক বেসরকারি স্কুল শিক্ষার্থী পেলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী সঙ্কটে ভোগে। এবছর বেসরকারি স্কুলগুলোতে ১০ লাখ শূণ্য আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে মাত্র ২ লাখ ৩৮ হাজার। ফলে ফাঁকা থাকবে সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি।
ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আগে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোর কাছে শূণ্য আসনের তথ্য চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। সে আলোকেই ভর্তির জন্য আবেদন চাওয়া হয়। গত ২৪ অক্টোবর বিভিন্ন স্কুলে ভর্তির জন্য প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তি আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। ১৪ নভেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের বেসরকারি ৩ হাজার ১৮৮ প্রতিষ্ঠানে আসন শূণ্য রয়েছে ১০ লাখ ৪ হাজার। কিন্তু এসব আসনে ভর্তির জন্য আবেদন পড়েছে মাত্র ২ লাখ ৩৮ হাজার। সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও এসব প্রতিষ্ঠানে ৭ লাখ ৭৬ হাজার আবেদন শূণ্য থাকবে।
মাউশি কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবেদনেই বলে দিচ্ছে শিক্ষাতপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান। এ ছাড়া শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বেড়েছে। কোনো দিক বিবেচনা না করে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়ার ফলেও এমন হতে পারে বলে তাঁদের মত।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে
প্রতিষ্ঠানগুলো যে তথ্য মাউশিতে পাঠিয়েছে, সে অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা ১১ লাখ ২২ হাজার ৯৯টি। এর মধ্যে সরকারি স্কুলে শূণ্য আসন ১ লাখ ১৮ হাজার ১০৬টি। আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার। সারা দেশের সরকারি ৬৫৮টি স্কুল এই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। এর মধ্যে ঢাকা শহরে প্রতিষ্ঠান ৪১টি।
মাউশির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর নামি-দামি কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য স্কুলে আসনের বিপরীতে এখনো শিক্ষার্থী সংকট রয়েছে। অনেক স্কুলে নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েও শিক্ষার্থী ভর্তি নিচ্ছে। আর জেলা পর্যায়ের পরিস্থিতি আরো খারাপ। সরকারি বিদ্যালয়গুলো ছাড়া অনেক স্কুলে আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী পাবে হাতে গোনা। এসব প্রতিষ্ঠান বেশির ভাগই এমপিওভুক্ত।
গত বছরের ভর্তির তথ্য বলছে, ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮০৭টি শূণ্য আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪১ জন শিক্ষার্থী। ফাঁকা ছিল ৬ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৬টি আসন। সেই হিসাবে বাকি ৭০ ভাগ আসন প্রার্থীর শিক্ষার্থী শূণ্য ছিল। বেসরকারি কয়েকটি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০২১ সালে প্রথম বারের মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।
আগামী ২৬ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে লটারির ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক এবং ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন।