নিজস্ব প্রতিবেদক,২৩ জানুয়ারী:
করোনা মহামারীতে বন্ধ থাকা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা বলা হলেও বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিটি শিক্ষার্থীর শিখন, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার চাহিদা পূরণের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
শনিবার এ গাইডলাইন প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
নির্দেশিকা প্রণয়নে অনুসরণ করা মূলনীতির মধ্যে রয়েছে-
* শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া।
* জাতীয় পর্যায়ের সব স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা মেনে এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করতে হবে।
* এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের (শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় স্বাস্থ্য ও প্রশাসন এবং কমিউনিটি) সম্পৃক্ত করতে হবে।
* স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুকরণ এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে সঠিক তথ্যপ্রাপ্তি, বাছাই ও তা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রাসঙ্গিক করতে হবে।
* দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত, জেন্ডার, নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধিতা বিবেচনা করে সবার জন্য প্রযোজ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
* প্রতিটি শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আনন্দঘন শিখন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
* প্রতিটি শিক্ষার্থীর পুষ্টি উন্নয়নের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে পুষ্টি শিক্ষা এবং পুষ্টিসেবা প্রদান নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।
* কোভিড-১৯ পরিস্থিতিকে নতুন স্বাভাবিকতা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
* শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (সরকারি/বেসরকারি, আবাসিক/অনাবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) জন্য বিবেচনা করতে হবে।
* সর্বোপরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান, প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক সক্ষমতা, জনবল ও দক্ষতা ইত্যাদি বিবেচনায় বাস্তবসম্মতভাবে নির্দেশনা প্রণয়ন করতে হবে।
নির্দেশিকা প্রণয়নে যেসব স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা সূচককে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো-
* শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্টাফ ও সংশ্লিষ্ট সবার সর্বদা মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা।
* প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রমে নির্দেশিত (৩ ফুট) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
* একসঙ্গে অধিক সংখ্যক মানুষের জমায়েতকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
* প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্দিষ্ট সময় পর পর নিয়ম মেনে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ও পরিষ্কারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
* হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার পালন করা ও উৎসাহিত করতে হবে।
* শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেঝেসহ সব এলাকা প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
* শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পানি, স্যানিটেশন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধা রাখা এবং পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
* শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা এবং কেউ অসুস্থ/আক্রান্ত থাকলে/হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার পাশাপাশি কন্টাক্ট ট্রেসিং করে অন্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
* শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটির মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ও সহযোগিতার মাধ্যমে গুজবের আতঙ্ক ও মহামারির বিস্তার রোধে শিক্ষার্থীসহ সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথাও গাইডলাইনে বলা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (সরকারি/বেসরকারি, আবাসিক/অনাবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) এই নির্দেশিকা ব্যবহার করতে পারবে।