বাংলা নিউজ,ঢাকা,৪ এপ্রিল:
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি বাড়ানো হবে কি-না, তা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, পরিস্থিতির অবনতি হলে শিক্ষার্থীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া ঠিক হবে না। ছুটি বাড়ানো হতে পারে সেই পরিস্থিতি দেখে। তবে সেই সিদ্ধান্তের জন্য আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে। পরিস্থিতি বিরূপ হলে সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ থাকা দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি শেষ হবে আগামী ৯ এপ্রিল। এরইমধ্যে গুঞ্জন উঠেছে এই ছুটি রোজা ও ঈদের ছুটির সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
সরকারের শীর্ষপর্যায়ের সিদ্ধান্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে ৩১ মার্চ এবং পরে তা বাড়িয়ে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নেওয়া হয়। আর সাধারণ ছুটি ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছিল। যা পরে বাড়িয়ে সাপ্তাহিক ছুটিসহ ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষায় এই ছুটি বাড়ানো হলেও এরইমধ্যে শনিবার (০৪ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৭০ জন। আর মৃত্যু হয়েছে আটজনের।
প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় শিক্ষাপঞ্জিও এলোমেলো হয়ে গেছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির বিষয়টিও মাথায় রাখছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে আসবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ।
তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত হলো এই পরিস্থিতির মধ্য থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ঠিক হবে না। এছাড়া ঈদের ছুটিও আসছে। সরকার নিশ্চয় সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুললে হল-ডরমেন্টরিগুলোও খুলে দিতে হবে। তখন একটা ঝুঁকি থেকেই যায়।
ছুটির মধ্যে করোনা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ এলাকার মানুষকে সচেতন করারও পরামর্শ দিয়েছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান।
নতুন করে একদিনেই নয় রোগী বাড়ায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দ্বিতীয় দফার ছুটি শেষ না হতেই ঈদ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির গুঞ্জন নিয়ে মহাপরিচালক বলেন, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পদক্ষেপ নেবে সরকার।
করোনার ছুটির মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গত ২৯ মার্চ থেকে সংসদ টেলিভিশনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। যতদিন প্রয়োজন এই ক্লাস নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মাউশি মহাপরিচালক।
ছুটি আর বাড়ানো হবে কি-না, জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, পরিস্থিতি তো খারাপের দিকে যাচ্ছে।
ছুটি বাড়ানো হবে কি-না, জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে সব। ৫ থেকে ৭ তারিখের দিকে বোঝা যাবে।
‘আগে তো জীবন। তারপর পড়াশোনা। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। দুর্যোগ কেটে গেলে একমাসেই পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’