নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে পিয়ার লতিফ সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠ-বস করানোর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে মতবিনিময় সভায় সেলিম ওসমান এ দুঃখ প্রকাশ করেন।
জাতীয় পার্টির এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘গত ১৩ মে শ্যামল কান্তি ভক্তর সঙ্গে ঘটনার জন্য আমি দুঃখিত, লজ্জিত।’
সেলিম ওসমান বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে আমি সংবাদ সম্মেলন বাতিল করেছি। এরশাদ বলেছেন, তোমার সঙ্গে আল্লাহ আছেন, আমরা আছি।’ গত ২৫ মে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়ে তা বাতিল করেন তিনি।
সংসদ সদস্য বলেন, ‘পার্টির প্রধান এরশাদ আমাকে বলেছেন, সেলিম তুমি তো ওলি হয়ে গেছ। তোমার জন্য কয়েক কোটি মানুষ মসজিদে মসজিদে দোয়া করছে।’
স্থাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও একজন সংসদ সদস্যেরও সমালোচনা করেন সেলিম ওসমান।
ঘটনার একাধিক তদন্ত সম্পর্কে সেলিম ওসমান বলেন, ‘তদন্ত করতে করতে স্কুলের শিশুদের মিথ্যাবাদী বানানো হচ্ছে।’ তিনি স্কুলশিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তর বিরুদ্ধে তাঁর কাছে কোটি টাকা দাবির অভিযোগ করেন।
মতবিনিময়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, বিভিন্ন মসজিদের ইমামরা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠান হলেও এখানে সেলিম ওসমান একাই কথা বলেন।
গত ১৩ মে স্কুলের সামনের একটি মসজিদ থেকে হঠাৎ করেই মাইকে ঘোষণা করা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছেন এবং সেখান থেকে এলাকাবাসীকে স্কুলের মাঠে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই দলে দলে স্কুলে ঢোকে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাঁরা স্কুলের দরজা ভেঙে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করে এবং তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। সংসদ সদস্য উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠ-বস করার শাস্তি দেন।
কান ধরে ওঠ-বসের পর সমবেত জনতার কাছে করজোড়ে মাফ চাইতেও বাধ্য করা হয় ওই প্রধান শিক্ষককে। পরে সংসদ সদস্যের নির্দেশে প্রধান শিক্ষককে পুলিশের হেফাজতে স্কুল থেকে বের করা হয়। এর পর পুলিশ চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, লজ্জা থাকলে সেলিম ওসমান আর সংসদে বসবেন না।