মাহফিজুর রহমান মামুন: শিক্ষার আলো বিস্তার প্রথমে শুরু হয় যাঁদের হাত দিয়ে, সেই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা বেতন পদমর্যাদায় এখনো চরমভাবে অবহেলিত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’ধরনের শিক্ষক রয়েছেন—প্রধানশিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক। আগে এই উভয় ধরনের শিক্ষকই ৩য় শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। ২০১৪ সালে প্রধানশিক্ষকদের ২য় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়া হয়। একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা এখনো ৩য় শ্রেণির পদমর্যাদায় রয়েছেন, যা মানুষ গড়ার কারিগরদের জন্য লজ্জাজনক।
একজন শিক্ষক কিভাবে ৩য় শ্রেণির কর্মচারী হন? প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক। তাছাড়া নিয়োগ পাওয়ার পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর ডিপার্টমেন্টের অধীনে বাধ্যতামূলকভাবে দেড় বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন নামে একটি উন্নতমানের ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করতে হয় তাঁদের। যেখানে এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পরে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে অন্য সকল ডিপ্লোমাধারী পেশাজীবী ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত, সেখানে স্নাতক পাসের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পরেও প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা ৩য় শ্রেণির কর্মচারী পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত! একই দেশে একই যোগ্যতায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা কেন এই বৈষম্যের শিকার?
সারা বিশ্বে প্রাথমিক শিক্ষকদের পদমর্যাদা যেখানে অতি উচ্চ, সেখানে আমাদের দেশে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের পদমর্যাদা ৩য় শ্রেণির—এটা খুবই দুঃখজনক। শিক্ষকরা আশা করেন, শিক্ষাবান্ধব বর্তমান সরকার দ্রুত প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদেরও ২য় শ্রেণির পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের যথাযোগ্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করবে।
লেখক- সহকারী শিক্ষক, ভীমদামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝলঝলি, তেপুকুরিয়া, বোদা, পঞ্চগড়