ঢাকার সাভারের ভাটপাড়া একালায় শিক্ষক গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার পর চিরকুট লিখে রাখার ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করে তিন হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৪, ৬ ও ১৩-এর যৌথ অভিযানে সোমবার রাতে যশোর, ঝিনাইদহ ও রংপুর এলাকা থেকে মূল পরিকল্পনাকারী ইমন খানসহ সাগর ও ছাদেক গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় লুট করা পাঁচ লাখ ২১ হাজার ৯৯ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, ওই শিক্ষক জমি কেনা-বেচা করতেন। এ কারণে তার কাছে সব সময় মোটা অঙ্কের টাকা থাকতো। টাকা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য শিক্ষককে হত্যার পর সমকামীর চিরকুট লিখে নাটক সাজানো হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত ২০ আগস্ট বেলা তিনটার দিকে সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় ৪৩ বছর বয়সী গোলাম কিবরিয়া নামের সাবেক এক স্কুল শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে ‘এই ব্যক্তি সমকামী করে পুলিশ ভাই, আমরা তাই মেরে ফেলেছি, ভাই ও অবৈধ কাজ করে……..আমরা ইসলামের সৈনিক’ লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে সাভার থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, গোলাম কিবরিয়া সাবেক শিক্ষক ছিলেন। তিনি কয়েক বছর ধরে নিজ বাড়িতে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। পাশাপাশি জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করতেন। গত ১৯ আগস্ট রাত ১০টার দিকে তার বড় ভাই গোলাম মোস্তফার ঘরে রাতের খাবার শেষে নিজ কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ২০ আগস্ট বেলা দুইটার দিকে কিবরিয়া ঘুম থেকে না ওঠায় তার বাড়ির লোকজন তাকে ডাকাডাকি করে।
বাড়ির লোকজন ঘরের ভেতর থেকে কোন সাড়া না পেয়ে একপর্যায়ে তার ঘরের পেছনের দরজা খোলা দেখতে পায়। এ সময় বাড়ির লোকজন রুমের ভেতর গিয়ে খাটের উপর লুঙ্গি দিয়ে নিহত শিক্ষকের হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় নিথর মৃতদেহ দেখতে পায়। এছাড়াও নিহতের রুমের মালামাল এলোমেলো ও আলমারি খোলা অবস্থায় ছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।