শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ শরীয়তপুরের নড়িয়া মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজে কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় বাংলা দ্বিতীয়পত্র ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ায় ৩৯ জন পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
কেন্দ্র সচিব বলছেন হল সুপারের অসতর্কতার কারনে এ ঘটনা ঘটেছে। কক্ষ পরিদর্শক ও হল সুপারকে কারন দর্শানো হয়েছে। ডেপুটি কন্ট্রোলার কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক বলছেন বিষয়টি তাকে জানানো হয়নি। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বছর শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় দুই কেন্দ্রের মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বরিবার পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় একটি কক্ষে তিনটি বিদ্যালয়ের ৩৯ জন পরীক্ষার্থী ২০১৬ সালের জন্য প্রস্তুতকৃত প্রশ্ন পত্রে পরীক্ষা দিয়েছেন।
এসএসসি পরীক্ষার্থী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নড়িয়া-২ কোড ৫৪৬ ,মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে গত ৫ ফেব্রুয়ারী বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় ১২১নং কক্ষে পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন,পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ১১জন ও শহীদ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬ জনসহ ৩৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
যার রোল ৪৫৫৯৩ থেকে ৪৫৫৯৪৩, ৯৫৬১১৯ থেকে ৪৫৬১২৯ এবং ৪৫৯৯৯ থেকে ৪৫৬০১৪ পর্যন্ত । কক্ষ পরিদশক ইকাদুল সেক ও আনোয়ার হোসেন, হল সুপার বিজয় কুমার মন্ডল ও কেন্দ্র সচিব ফরিদ আল হোসাইন এর অসতর্কতা ও গাফলতির কারনে ২০১৭ সালের রচনা মূলক প্রশ্নপত্রের পরিবর্তে ২০১৬ সালের পুরাতন রচনা মূলক প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হলে পরীক্ষার্থীরা তাড়া হুড়ো করে ভুল প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা দেয়।
পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে এ ভুল ধরা পড়লে এ নিয়ে জানাজানির পর কেন্দ্র সচিব স্থানীয় কতৃপক্ষকে না জানিয়ে শুধুমাত্র ঢাকা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তারেক বিন আজিজ কে অবহিত করেন।
এ নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। তারা তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ভেবে সোমবার দুপুরে শরীয়তপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
এরপর ধীরে ধীরে বিষটি প্রশাসনের মধ্যে জানাজানি হয়। পরীক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিবেচনার সহিত খাতা দেখার জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের দৃষ্টি কামনা করেন।
মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজে কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক ফারুক খান বলেন, আমার মেয়ে ২০১৭ সালের পরীক্ষার্থী।
তাকে ২০১৬ সালের পুরাতন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। তাতে মেয়ের পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। আমি আমার মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত। এ বিষয়ে বিবেচনার জন্য কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাই।
কক্ষ পরিদর্শক ইকাদুল সেক বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিটিং করে বলেছেন পরীক্ষার পূর্বে প্রশ্নপত্র দেখা যাবেনা। এ কারনে আমরা প্রশ্নপত্র দেখিনি। পরীক্ষার পরে পরীক্ষার্থীদের কাছে জেনে কেন্দ্র সচিবকে অবহিত করেছি।
হল সুপার বিজয় কুমার মন্ডল বলেন, পরীক্ষা শুরুর পূর্বে ভুল বশত ২ সেট প্রশ্নপত্র ১২২ নং কক্ষে চলে যায়। পরবর্তী নুতন করে ১২১ নং কক্ষে প্রশ্ন পাঠানো হয়। সেই প্রশ্নপত্রই ছিল ২০১৬ সালের। অসতর্কতার কারনেই এটা হয়েছে।
কেন্দ্র সচিব ফরিদ আল হোসাইন বলেন, হল সুপার বিজয় কুমার মন্ডলের অসতর্কতার কারনে পুরাতন প্রশ্নপত্রে ৩৯ জনের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।
আমি জানার পর ঢাকা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কে জানিয়েছি। সে আমাকে শত ভাগ নিশ্চিত করেছেন পরীক্ষার্থীদের কোন ক্ষতি হবেনা। এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। এ ছাড়া কক্ষ পরিদর্শক ও হল সুপারকে কারন দশানো নোটিশ দিয়েছি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নলিনী রঞ্জন রায় বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমাকে জানানো হয়নি। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।