নিজস্ব প্রতিবেদক,৩ আগষ্ট: রাজধানীর কুর্মিটোলায় দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নামা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের পরিবহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করছে। এর মধ্যেই রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজেও লেগে পড়েছে তারা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সারিবদ্ধভাবে রিকশা চলাচলের ব্যবস্থা করে ট্রাফিক পুলিশের জন্য এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সরেজমিন ধানমন্ডি ১ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার ৩টি মোড়ে অবস্থান নিয়েছে কিছু শিক্ষার্থী। সাইন্স ল্যাবে পুলিশ বক্সের সামনে, ১ নম্বর সড়কের মাঝামাঝি চৌরাস্তায় এবং ১ নম্বর সড়ক থেকে বের হয়ে সাত মসজিদ রোডের মোড়ে অবস্থান নিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে শিক্ষার্থীরা। তারা জানায়, নিরাপদ সড়কের পাশাপাশি রাস্তায় পরিবহন ব্যবস্থায় কীভাবে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যায় তা দেখাতে চান তারা। তাদের মতে, ট্রাফিক পুলিশের পক্ষেও এ কাজ সম্ভব যদি তাদের সদিচ্ছা থাকে। একটু চেষ্টা করলেই লাইনে আনা সম্ভব।.
বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সকালে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা এক লেনে গাড়ি চালাতে বাধ্য করার পাশাপাশি গাড়ির কাগজপত্র এবং ড্রাইভারের লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। যারা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রাস্তায় শৃঙ্খলা দেখে এই রাস্তায় প্রতিদিন যাতায়াতকারী অনেকেই ছাত্রদের এ কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন। নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ফারুক বলেন, ‘এই রাস্তা ধরে সপ্তাহের প্রতিদিন যাওয়া-আসা করি। মঙ্গলবার মার্কেট বন্ধ থাকে বলে এই রাস্তা একটু ফাঁকা থাকে। না হলে প্রত্যেক দিন জ্যাম লেগে থাকে। রিকশাগুলো লাইন করে ৫-৬টা। যার কারণে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়িগুলো আসতে পারে না। শিক্ষার্থীরা যা করছে এটা তো পুলিশের করার কথা। তাদের একটি পুলিশ বক্স আছে মোড়ে। তারপরও তারা ব্যর্থ। শিক্ষার্থীরা শতভাগ সফল।’.
এই এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালক মিজান জানান, ‘এই রাস্তায় সব এক লাইনে চললে তো জ্যাম থাকবো না। আমরাও সমর্থন করি। আমাদেরও জ্যামে সময় নষ্ট হয়। ভালা কাজ করসে তারা।’
অন্যদিকে ধানমন্ডি ল্যাবএইডের সামনেও একই চিত্র দেখা যায়। সেখানে এক লেনে গাড়ি, এক লেনে রিকশা, আর আরেক লেনে মোটরসাইকেল প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত সিটি কলেজের শিক্ষার্থী রাসেল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চেষ্টা থাকলে সবাইকে লাইনে আনা সম্ভব। এই রাস্তায় আমরা প্রতিদিন যাওয়া আসা করি। মানুষের কী পরিমাণ দুর্ভোগ হয় আমরা জানি। তাই এই লাইনে আনার চেষ্টা। চাইলে ট্রাফিক পুলিশও করতে পারে এই কাজ। কিন্তু তাদের সদিচ্ছা নেই মনে হয়। থাকলে আমাদের উদ্যোগ নিতে হতো না।’