বহু ইতিহাসের সাক্ষী রমনা কালী মন্দিরের নতুন ভবন ও সম্প্রসারিত অংশের উদ্বোধন করলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ; অংশ নিলেন আরাধনায়।
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসা কোবিন্দ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী সবিতা কোবিন্দ ও মেয়ে স্বাতী কোবিন্দকে সঙ্গে নিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে পৌঁছান। সেখানে তাদের স্বাগত জানান ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
আরো পড়ুনঃ শপথ মঞ্চের ভুল ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’: কর্তৃপক্ষ
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা সফরের শেষ দিন রমনা কালী মন্দিরের নতুন ভবন ও সম্প্রসারিত অংশের উদ্বোধন করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ।
ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান কালী মন্দিরের সংস্কার হওয়া অংশের ফলক উন্মোচন করেন এবং পরে স্ত্রী ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পূজা দেন দেবী প্রতিমার সামনে।
মূল মন্দিরে ঢোকার সময় শাঁখ বাজিয়ে সনাতনী রীতিতে অভিবাদন জানানো হয় ভারতের রাষ্ট্রপ্রতিকে।তিন দিনের সফর শেষে দুপুরে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
প্রার্থনা শেষে মন্দির প্রাঙ্গনে উপস্থিত মন্দির কমিটির সদস্য এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন কোবিন্দ।
সব মিলয়ে ১৫ মিনিটের মত রমনা কালী মন্দিরে ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। সেখান থেকে ফিরে যান হোটেলে।
বাংলাপিডিয়া বলছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শণার্থী সম্প্রদায় ঢাকার রমনায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় পাঁচশ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া গড়েন। তখন এ আখড়া কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সে জায়গাতেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন, যা তখন পরিচিতি পায় কালিবাড়ী নামে।
১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে ধ্বংস হয় প্রাচীন এ মন্দির। মন্দির ও আশ্রমে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মন্দিরের সেবায়তসহ প্রায় একশ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সাধারণ মানুষ নিহত হন।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ধ্বংস করা অংশটি ভারত সরকারের সাত কোটি টাকা অনুদানে সংস্কার করা হয়েছে। ভক্তনিবাস ও মূল মন্দিরও পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। শুক্রবার সেই অংশেরই উদ্বোধন করলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ।
বৃহস্পতিবার সকালে শেরেবাংলা নগরে জাতীয় প্যারেড ময়দানে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন তিনি। বিকালে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
সফর শেষ করে শুক্রবার দুপুরেই দিল্লির উদ্দেশে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।