উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে আক্রমণ অনেক বেশি করল ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে ভাবে রক্ষণাত্মক পরিকল্পনা করে নেমেছিল ভারত, এই ম্যাচে তা দেখা গেল না। ফলে গোলের সুযোগ অনেক তৈরি হল। যদিও তা কাজে লাগাতে পারলেন না সুনীল ছেত্রীরা। আক্রমণ ভাল হলেও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের তুলনায় এই ম্যাচে রক্ষণ খারাপ খেলল। উজবেকিস্তানের তিনটি গোলই হল রক্ষণের ভুলে। তার ফলে অনেক লড়াই করেও হারতে হল ভারতকে।
যে ভুল অস্ট্রেলিয়া করেছিল, তা করল না উজবেকিস্তান। আগের ম্যাচ দেখেই তারা বুঝে গিয়েছিল ভারতের রক্ষণকে থিতু হওয়ার সময় দিলে তা ভাঙতে সমস্যা হবে। তাই খেলার শুরুতেই গোল তুলে নেওয়ার চেষ্টা করল তারা। তাতে সফলও হল উজবেকিস্তান। ম্যাচের ৪ মিনিটেই গোল করলেন আব্বোসবেক ফাইজ়ুলায়েভ। বক্সের মাথা থেকে বল বাড়ান শেরজদ নাসরুল্লায়েভ। দৈহিক উচ্চতা কাজে লাগিয়ে হেডে গোল করেন ফাইজ়ুলায়েভ। এগিয়ে যায় উজবেকিস্তান।
প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের শারীরিক ক্ষমতার সামনে পিছিয়ে পড়ছিলেন ভারতীয় ফুটবলারেরা। আগের ম্যাচ থেকে এই ম্যাচ চার জন ফুটবলার বদল করেছিলেন কোচ ইগর স্তিমাচ। মহেশ নাওরেম সিংহ, আকাশ মিশ্র, অনুরুদ্ধ থাপা ও সুরেশ সুযোগ পেয়েছিলেন প্রথম একাদশে। তাঁরা খেলা তৈরি করার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও মাঝমাঠের দখল ছিল উজবেকদের দখলে। ফলে সমস্যায় পড়ছিল ভারত।
১৮ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ইগর সের্গিভ। এই গোলটি হয় রক্ষণের ভুলে। নিজের অর্ধে বলের দখল হারান রাহুল ভেকে। বল নিয়ে বক্সে ঢুকে গোল করার চেষ্টা করেন ফাইজ়ুলায়েভ। আকাশের পায়ে বল লেগে পোস্টে গিয়ে লাগে। ফিরতি বলে গোল করেন সের্গিভ।
৩০ মিনিটের পর থেকে খেলায় ফেরে ভারত। অনেক বেশি বলের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গোটা ম্যাচে তেমন আক্রমণ করতে পারেনি ভারত। কিন্তু এই ম্যাচে শেষ ১৫ মিনিটে কয়েক বার বিপক্ষ বক্সে ঢুকে পড়েন সুনীলরা। নাওরেমের একটি শট ভাল বাঁচান উজবেক গোলরক্ষক। বিরতির ঠিক আগেই আবার ভুল করে ভারতের রক্ষণ। ফিরতি বলে গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন নাসরুল্লায়েভ।
বিরতির পরেও ভারত আক্রমণ থামায়নি। ০-৩ গোলে পিছিয়ে থাকলেও গোল করার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে তারা। ৫০ মিনিটের মাথায় রাহুল কেপির শট বারে লাগে। ফিরতি বলে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন সুনীল। কিন্তু পারেননি তিনি। ৭১ মিনিটে সুনীলকে তুলে ঈশান পণ্ডিতাকে নামান কোচ স্তিমাচ। পরের মুহূর্তেই রাহুল ভেকের হেড কোনও রকমে বাঁচান উজবেক গোলরক্ষক।
৩-০ গোলে এগিয়ে থাকায় বেশি ঝুঁকি নিচ্ছিল না উজবেকিস্তান। নিজেদের মধ্যে বল ধরে রাখার খেলা খেলছিল তারা। তাগিদ দেখাচ্ছিল ভারত। গোলের জন্য ওঠায় কোনও কোনও সময়ে রক্ষণে ফাঁক তৈরি হচ্ছিল। সেখান থেকে প্রতিআক্রমণে উঠছিল উজবেকিস্তান। এক বার গোল লাইন সেভ করেন আকাশ।
শেষ পর্যন্ত ০-৩ গোলে হারল ভারত। এশিয়ান কাপের নক আউটে যেতে হলে পরের ম্যাচে সিরিয়াকে হারাতেই হবে ভারতকে। তবে যে ভাবে চাপের মুখে দল খেই হারিয়ে ফেলছে তা স্বস্তি দিতে পারছে না কোচ স্তিমাচকে।