চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : বেলা দেড়টা। ঢং ঢং করে বেজে উঠল বিরতির ঘণ্টা। শ্রেণিকক্ষ থেকে টিফিনের বাটি হাতে বেরিয়ে এল শিক্ষার্থীরা। বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে বসে বাটি খুলল তারা। প্রায় অর্ধেক বাটিতে খাবার নেই। যারা খাবার এনেছে, তারা দিল শূন্য বাটিতে। এরপর সবাই শুরু করল দুপুরের খাবার (মিড ডে মিল)।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌর এলাকার আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত চিত্র এটি। গত সোমবার গিয়েও এর দেখা মেলে। ১ আগস্ট থেকে ‘মিলেমিশে মিড ডে মিল’ নামে এ কর্মসূচি নেওয়া হয়। দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বিদ্যালয়মুখী করতে এটি দারুণ সাড়া জাগিয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক স্বরূপ কুমার দাস বলেন, এখানে দুপুরের খাবারের অভাবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার কমতে থাকে। এ কারণে এক সমাবেশে সচ্ছল অভিভাবকদের সন্তানদের দুপুরের খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত একমুঠো খাবার যোগ করতে অনুরোধ করা হয়। এতে একবাক্যে সবাই রাজি হন। শিশুদের খাওয়ার জন্য ৮৪ জনকেই বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একই রকমের টিফিন বাটি দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে পড়াশোনার মান বেড়ে চলেছে।
গত সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির কার্যালয়ের বারান্দায় পাশাপাশি বসে শিক্ষার্থীরা দুপুরের খাবার খাচ্ছে। একে অপরকে ভাত, রুটি ও তরকারি তুলে দিচ্ছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ এক পরিবেশ।
এ সময় পঞ্চম শ্রেণির সুমাইয়া আক্তার বলে, ‘সহপাঠীর সঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়ার আনন্দই আলাদা। বড় হয়েও এভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াব।’
জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, অন্যান্য বিদ্যালয়ে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।