মাসিক ভাতা ৫০ হাজার টাকা করা, বকেয়া পরিশোধ ও নিয়মিত ভাতা প্রদানের দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকেরা।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা।
ট্রেইনি চিকিৎসক ডা. সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘যারা নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিচ্ছি, ভবিষ্যতের স্পেশালিস্ট চিকিৎসক হব, তাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই প্রথমবারে এমবিবিএস পাস করতে পারে না। ফলে তাদের বয়স হয়ে যায় মোটামুটি ২৬-৩০ বছর। এত বেশি বয়স হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিবারের বোঝা নিজেদের কাঁধে চলে আসে। যার ফলে মাত্র ২০ হাজার টাকায় শহরে অবস্থান করে কেউ পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে না। ঢাকা শহরে যেখানে একটি মোটামুটি মানের বাসা ভাড়া নিতেই ২০ হাজারের মতো টাকা খরচ হয়, তার পরিবারের পেছনে খরচ, নিজের হাতখরচ মিটিয়ে চলাটা অনেক দুঃসাধ্য। সেখানে তাদের মাসিক মাত্র ২০ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে, এটা আমাদের সঙ্গে ছলনা করা হচ্ছে। ভাতা বৃদ্ধি এটা আমাদের ভিক্ষা নয়, এটা আমাদের অধিকার।’
অবস্থানরত চিকিৎসকেরা আশ্বাস নয় প্রমাণ চায়, ‘৫০ হাজার ভাতা চাই; ক্ষুধা পেটে সেবা নয়, অধিকার চাই, ভিক্ষা নয়; ঐক্য ঐক্য, চিকিৎসকের ঐক্য’—ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাজ রোগীদের সেবা দেওয়া। কিন্তু এখন রাস্তায় নামতে হয়েছে, দাবি আদায় করার জন্য। রোগীদের সেবা দিতে আমরা ফিরে যেতে চাই, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে ২০ হাজার টাকায় একজন ডাক্তার কীভাবে তার সংসার চালাতে পারে—এটাই বিবেকবানদের কাছে প্রশ্ন! আমাদের দাবি নিয়ে ছয় মাস যাবৎ আমাদের যাঁরা অভিভাবক রয়েছেন—তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, সবাই আমাদের নৈতিকভাবে সমর্থন করেছে। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণে কোনো ধরনের আশানুরূপ পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। দীর্ঘ ছয় মাস যাবত দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমরা আজ সারা বাংলাদেশ ট্রেইনি ডাক্তাররা একযোগে কর্মবিরতিতে গিয়েছি। আমাদের দাবি পূরণ করে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলমান থাকবে।’
কর্মবিরতিতে থাকা চিকিৎসকেরা নিজেদের শক্ত অবস্থান সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্ন পথে ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগেও অনেক যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্ন অজুহাতে নস্যাৎ করা হয়েছে। আমরা এই আন্দোলনকে ভিন্ন পথে ঘুরাতে দেব না। আমরা আমাদের দাবি, মাসিক ভাতা ৫০ হাজার টাকা না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এ কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচিতে শতাধিক ট্রেইনি চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন।