নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক পর্যায়ের মূল্যায়ন কার্যক্রম স্থগিত থাকায় ঝুলে আছে কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও এ নিয়ে সৃষ্ট সহিংসতার জেরে গত ১৬ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে যায় ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর অনেক কিছু সাধারণ ধারায় ফিরলেও এক কোটি শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন এখনও শুরু হয়নি। কবে নাগাদ এই প্রক্রিয়া শুরু হবে— তা নিয়েও কোনো সুস্পষ্ট মন্তব্য করতে পারছে না জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ফলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের শঙ্কা বাড়ছেই।
তথ্যমতে, চলতি বছর সারাদেশে ষষ্ঠ শ্রেণির প্রায় ২৫ লাখ, সপ্তম শ্রেণির ২৬ লাখ ২৩ হাজার, অষ্টম শ্রেণির ২৫ লাখ ৭১ হাজার এবং নবম শ্রেণির ২৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করছেন। সে হিসেবে এ চার শ্রেণির ১ কোটির কিছু বেশি শিক্ষার্থী নতুন শিক্ষাক্রমে অধ্যয়নরত। গত ৩ জুলাই থেকে এই শিক্ষার্থীদের ষান্মাসিক মূল্যায়ন শুরু হয়। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে ১৬ জুলাই সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে এই চার শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৬ বিষয়ের মূল্যায়ন আটকে যায়।
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও এসব শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন নতুন করে শুরু করার কোন সিদ্ধান্ত পায়নি স্কুলগুলো। ফলে এসব শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন আটকে গেছে।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, নতুন করে মূল্যায়ন নির্দেশনা না পাওয়ায় তারা অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছেন। কবে থেকে মূল্যায়ন শুরু হবে— তাও বোঝা যাচ্ছে না। যা শঙ্কায় ফেলেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
নতুন শিক্ষাক্রম ও এর মূল্যায়ন তদারকি করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এনসিটিবির নির্দেশনাতেই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরসহ অন্যান্য অধিদপ্তরগুলো। তবে, এ শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কবে নাগাদ শুরু হবে সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি এনসিটিবি সংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে এনসিটিবির শিক্ষাক্রম উইংয়ের সদস্য অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন, এটা পলিসি ডিসিশন। মূল্যায়ন কবে নাগাদ শুরু হবে তা আমরা বলতে পারছি না। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করা এখনই সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলামও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।