মাদারীপুরের শিবচরে সড়ক দুর্ঘটনার পর বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মুখে উঠে এলো ঘটনার ভয়ংকর বর্ণনা। দুর্ঘটনায় বেঁচে গেছেন সাত বছরের শিশু সাজ্জাদ।
সেই সময়কার বর্ণনা দেন শিশুটির মা আনোয়ারা বেগম (২৮)।
তিনি বলেন, ‘মরদেহের নিচে চাপা পড়ে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলাম। ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছি। আল্লাহ আমাদের দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন। আমার আর ছেলের গায়ে একটুও আঁচড় লাগেনি।’
আরো পড়ুন: ঢাবি ছাত্রী সুইটির ক্যাম্পাসে ফেরা হলো না
এর আগে সকাল ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও আহত হন কমপক্ষে ৩০ জন।
আনোয়ারা বাগেরহাটের মোল্লার হাট উপজেলার গারবা গ্রামের ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লার স্ত্রী।
আনোয়ারা বেগম জানান, ভোরে বাগেরহাট থেকে ছেলেকে নিয়ে ইমাদ পরিবহনে করে ঢাকায় অসুস্থ আত্মীয়কে দেখার জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। চালকের বাম পাশের আসনে বসেছিলেন তিনি, আর ছেলে কোলে ছিল। হঠাৎ বাসের বাম পাশের টায়ার পাংচার হয়ে যায়। এরপর গাড়িটি খাদে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
আনোয়ারার স্বামী শহিদুল মোল্লা বলেন, আমি বিধাতার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমার সন্তান ও স্ত্রীকে নতুন করে আবার ফিরে পেয়েছি।
এ দিকে দুর্ঘটনার বিষয়ে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, ইমাদ পরিবহনের একটি বাস গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। সকাল ৮টার দিকে বাসটি পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে ঘটনাস্থলে বাসচালকসহ ১৪ যাত্রীর মৃত্যু হয়।
পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে এবং চিকিৎসাধীন থেকে আরও পাঁচ যাত্রী মারা যান। এ দুর্ঘটনায় আহত ২৫ জনকে উদ্ধার করে শিবচর ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মাসুদ আলম আরও বলেন, বাসটির যান্ত্রিক ত্রুটি আর বেপরোয়া গতির কারণেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আগামীতে এমন দুর্ঘটনা না ঘটে এজন্য সড়কে তৎপরতা বাড়ানো হবে।