নিজস্ব প্রতিবেদক।। মাদরাসায় না গিয়েও গত ১৬ বছর ধরে বেতন তুলছেন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার সৈয়দ আহমেদ মডেল আলিম মাদরাসার এবতেদায়ী শাখার সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম। তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়মিতভাবে প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করেন।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২ অক্টোবর সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি অভিযোগ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, ক্লাস না চালিয়ে প্রতি মাসে বেতন তুলছেন আর নামমাত্র সম্মানি দিয়ে তার জায়গায় চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করে আসছেন।
আরো পড়ুন : চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ
শুধু তাই না। শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজের খেয়াল-খুশি মতো চলেন। এ ছাড়াও মাদরাসায় যত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আছে, সবকিছুই সিরাজুল ইসলাম দেখেন।
এলাকাবাসী জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জুল্লু সাহেব মামলা ও কলেজ হাটের দেখাশোনার কাজে ব্যস্ত থাকায় স্কুলে যাওয়ার সময় পান না। এসব নিয়ে বলতে গেলে এ এলাকায় থাকা দুষ্কর হয়ে যাবে। সপ্তাহে দুটি গরুর হাট বসে মাদরাসা মাঠে। সেদিন দুপুর ১২টায় ছুটি দেন মাদরাসা।
খণ্ডকালীন শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক ওই শিক্ষকের পরিবর্তে ক্লাস পরিচালনা করার কথা স্বীকার করেন। ‘আপনি এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক তা কোন রেজুলেশনে হয়েছে বা আপনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন?’ এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এত কিছু জানি না। ক্লাস নিই, বেতন পাই।’
সৈয়দ আহমেদ মডেল আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মোমিনের বলেন, ‘মেম্বার রবিউল যে অভিযোগ তুলেছেন, তা সঠিক নয়। আসলে ওই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানের কাজেই বগুড়া যাওয়া-আসা করতে হয়। তাই মাঝেমধ্যে ক্লাস মিস হয়।’
‘সপ্তাহের বেশির ভাগ সময় কেন বগুড়া যেতে দেখা যায়?’ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকের কেসের জন্য ও কলেজে গরুর হাটের যাবতীয় কাজের পেছনে সময় দিতে হয়। এর জন্য আমরা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করি যেন কোনো ঘাটতি না থাকে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বৃকীতি প্রামাণিক অভিযোগের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, ‘তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’