ভুল প্রশ্নে চার ঘণ্টার পরীক্ষা

ডেস্ক: বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব ও হল সুপারের অবহেলার কারণে ২০১৬ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে এসএসসির গণিত পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, তিন ঘণ্টার পরীক্ষার সময় নির্ধারণ থাকলেও ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা চলে চার ঘণ্টা। তারপরেও ভালো পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন ও হতাশা প্রকাশ করছেন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।

শনিবার আগৈলঝাড়া উপজেলার শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩৮৩ জন। এর মধ্যে ৮১ জনকে ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছিল।

ওই কেন্দ্রের ৬ নম্বর হলের পরীক্ষার্থী ও উপজেলার কাঠিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব বাড়ৈ, অমিও অধিকারী, অরিন্দমসহ অনেকেই জানান, তাদের হলে ১২ জন পরীক্ষার্থী গণিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের যথাসময়ে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষার্থীরা প্রথমে এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অন্তত ৩০ মিনিট পর তাদের ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে বলে হল সুপার ও কেন্দ্র সচিবকে অবহিত করে। কেন্দ্র সচিব ও শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ও হল সুপার কাঠিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল চন্দ্র কর পরীক্ষার্থীদের কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে সরবরাহকৃত প্রশ্নেই তাদের উত্তর লিখতে বলেন। শিক্ষার্থীরা তাদের নির্দেশ মতো ২০১৬ সালের সরবরাহ করা ভুল প্রশ্ন পত্রের উত্তর লেখে। এমসিকিউ পরীক্ষার পর সরবরাহকৃত সৃজনশীল প্রশ্ন বিতরণকালে প্রশ্নপত্রে সংকট ধরা পরে।

এ সময় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধ করে পার্শ্ববর্তী পরীক্ষা কেন্দ্র ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমি ও গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ফটোকপি করা প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। পরে সরবরাহকৃত ফটোকপি করা সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেয় পরীক্ষার্থীরা।

এদিকে তিন ঘণ্টার পরীক্ষা চার ঘণ্টা নেয়ার ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে শহরে ছড়িয়ে পড়লে সংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য কেন্দ্রের সামনে গেলে সেখানে উপস্থিত পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশ্রাফ আহম্মেদ রাসেল কোনো সাংবাদিককে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি।

তিনি কেন্দ্রের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। মোবাইল ফোনে তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে চার ঘণ্টা পরীক্ষা নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রশ্নপত্র দেরিতে দেয়ায় তাদের পরীক্ষার সময় বাড়ানো হয়েছে। অবশ্য তিনি প্রথমে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে তার কাছে পুনরায় ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত ভুল।

ইউএনও জানান, ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের খবর কেন্দ্র সচিব বা হল সুপার তাকে জানায়নি। সৃজনশীল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করার পরে পরীক্ষার্থীদের কাছে ভুলের বিষয়টি ধরা পড়ে। এ ৮১ জন পরীক্ষার্থীর ভাগ্যে কী ঘটবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। তবে বিষয়টি তাৎক্ষণিক বরিশাল শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে তিনি কেন্দ্র সচিব, হল সুপারসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে সুপারিশ করবেন বলেও জানান তিনি। সুত্র: জাগো নিউজ

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।