কিউএস, টাইমস হায়ার এডুকেশন, সিমাগো, ওয়েববোমেট্রিক্স, সাংহাই প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে। যেখানে বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কয়েকটি সেরা পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কোন র্যাঙ্কিংয়েই জায়গা হয় না শিক্ষার্থীর সংখ্যার বিচারে দেশের সবচেয়ে বড় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের।
বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মানদণ্ডে দাঁড় করিয়ে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে আনতে ইতিমধ্যে কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিংয়ে আসতে আরও সময় লাগবে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাতে উপাচার্য বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নিয়ে আসা সর্ম্পকে তার পরিকল্পনার কথা জানান।
ড. মশিউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী সংখ্যা কমিয়ে না আনলে একটি এফিলিয়েটেড ইউনিভার্সিটির এত অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে আসতে আরও সময় লাগবে। র্যাঙ্কিংয়ের মডেলে এনে স্নাতক করানো হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও একসময় র্যাঙ্কিংয়ে আসবে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা অন ক্যাম্পাস অনার্স চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটি সাজিয়ে আরও উন্নত এবং তথ্যবহুল করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহের তথ্যও এই ওয়েবসাইটে আনা হবে। এতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অন্যরা আরো ভালোভাবে জানতে পারবে। এই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।
প্রতিবছর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় করা র্যাঙ্কিংয়ে কলেজ সমূহের অগ্রগতি রয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য আরও বলেন, অধীনস্থ কলেজসমূহ নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৫৭টি এফিলিয়েটেড কলেজের অবস্থান অনুযায়ী তালিকা করা হয়। আমাদের র্যাঙ্কিংয়ে দীর্ঘদিন থেকে রাজশাহী কলেজ ভালো অবস্থানে রয়েছে। কলেজসমূহের তথ্য সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট কিছু ছক ধরে এই র্যাঙ্কিং নির্ধারণ করা হয়। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের করা র্যাঙ্কিংই শুধু র্যাঙ্কিংয়ে নয়, আমাদের কলেজসমূহের পজিশনও কিছু ক্রাইটেরিয়া পূরণ করে হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যাবস্থাপনায় কলেজ র্যাঙ্কিং ছাড়াও মডেল কলেজ নামের আরেকটি প্রোগ্রাম রয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. মশিউর রহমান। তিনি জানান, নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্রাইটেরিয়া ধরে আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল কলেজ তালিকা তৈরি করি। এতে আমরা কলেজসমূহের অগ্রগতি দেখে ফ্রি মডেল কলেজ তালিকা তৈরি করি এবং মডেল কলেজ রূপ পেতে ওইসব কলেজের যেসব ঘাটতি রয়েছে তা দেখিয়ে দেই।
তিনি বলেন, এতে কিছু কলেজ নিয়মিতই ভালো করছে। আমি মনে করি, উত্তরাঞ্চলে উত্তর বাঙলা নামের একটি কলেজ রয়েছে, এর লাইব্রেরিতে যে পরিমাণ বই অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও এই পরিমাণ বই নেই। এছাড়া রাজশাহী কলেজের পরিবেশ এবং ল্যাব দেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও উন্নত বলে দাবি করেন উপাচার্য।
তিনি আরও বলেন, চাঁদপুরের পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের দিকে তাকালে দেখা যাবে, একটা কলেজ ক্যাম্পাসের পরিবেশ এত সুন্দর হতে পারে নাকি? রতন নামের একজন প্রিন্সিপাল এই কলেজের চেহারা চেঞ্জ করে দিয়েছে
আন্তর্জাতিক মানের র্যাঙ্কিংয়ে পৌঁছাতে আমাদের আরও সময় লাগবে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, তবে আমাদের নিজেদের ব্যাবস্থাপনায় যে র্যাঙ্কিংয়ে করা হয় সেখানে কলেজসমূহের পজিশন পরিবর্তন হচ্ছে। কলেজসমূহ নিজেদের মধ্যে তুলনা করে আগাচ্ছে। যেহেতু একই কলেজ বারবার শীর্ষ তালিকায় যাচ্ছে, সেখানেও ভিন্ন ধরণের ক্যাটাগরি করে ভাগভাগ করারা পরিকল্পনা আছে আমাদের।