নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মামলার কারণে স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার খবর উদ্বেগজনক। রোববার সমকালে ‘বরিশাল বিভাগের স্কুল-সহস্রাধিক শিক্ষক পদ শূন্য’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগ এক বছর ধরে স্থগিত।
কারণ হিসেবে বলা হয়েছে- বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষএনটিআরসিএর একটি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ একটি পক্ষের মামলা। এনটিআরসিএ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
তারা ১২তম ব্যাচে নিবন্ধনধারীদের মেধাক্রমে নিয়োগ দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এর আগে নিবন্ধনধারী এক দল নিজেদের বঞ্চিত মনে করে এবং উচ্চ আদালতে রিট করে। এ কারণে পদ খালি থাকলেও নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে না।
কেবল বরিশাল বিভাগেই শরীরচর্চা বিষয়ে ২২০টি পদ শূন্য। গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা প্রভৃতি বিষয়েও পদ শূন্য রয়েছে।
প্রতিবেদনে বরিশাল বিভাগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এনটিআরসিএ যেহেতু গোটা দেশের শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা, তাই ধরে নিতে পারি যে, বাংলাদেশের সব বেসরকারি স্কুল-কলেজে একই ধরনের সমস্যা বিদ্যমান। অর্থাৎ সর্বত্রই পদ শূন্য। এটা শুভলক্ষণ যে, বাংলাদেশে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সর্বত্রই এমনকি হতদরিদ্র পরিবারগুলোর সন্তানরাও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চাইছে। এর পেছনে সরকারের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনাপূর্ণ কর্মসূচির অবদান অনস্বীকার্য। এখন বড় চ্যালেঞ্জ শিক্ষার মান বাড়ানো। এ জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে চাই দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক।
যেহেতু সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের জন্য শিক্ষকদের তালিকা প্রস্তুত করছে, তাই কোনো প্রতিষ্ঠানে পদ শূন্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন কাউকে নিয়োগ প্রদানে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি কিংবা একসঙ্গে অনেকে সংক্ষুব্ধ হলে আদালতে কিংবা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার চাইতেই পারে।
মামলার রায় ইতিমধ্যে প্রকাশ হয়েছে। তাই এর দ্রুত নিষ্পত্তি করা বাঞ্ছনীয়। পাঠদান হোক বা না হোক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীরা এক শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করে অন্য শ্রেণিতে ওঠার জন্য পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের বেশিরভাগ পাস করছে। কিন্তু শিক্ষক না থাকায় শিক্ষায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এ দায় তো গুরুতর। ছাত্রছাত্রীদের এ ক্ষতি কে পূরণ করবে? আমরা মনে করি, পাঠদানের ক্ষেত্রে একদিনের ক্ষতিও অপূরণীয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্নিষ্টরা দ্রুত শিক্ষক পদে নিয়োগের বাধা দূর করায় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে- এটাই প্রত্যাশা।
সূত্র :দৈনিক সমকাল।