বৃহত্তর ফরিদপুরের জন্য দুটি কমিউটার ট্রেন চালু

Image

বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল থেকে স্বল্প আয়ের মানুষের যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে উদ্বোধন করা হয়েছে দুটি কমিউটার ট্রেন। আজ রোববার থেকে ট্রেনগুলো আনুষ্ঠানিক যাত্রী পরিবহন করবে। ভাঙ্গা ও চন্দনা কমিউটার নামে ট্রেন দুটি চালু করলেও এর ভাড়া নির্ধারণ করার পরে যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে। মূলত পদ্মা সেতুর টোলের কারণে স্বল্প দূরত্বে বেশি ভাড়া হয়ে গেছে বলছেন অনেকেই।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, মাদারীপুরের শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ‘ভাঙ্গা কমিউটার’ ট্রেন ও ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে ‘চন্দনা কমিউটার’ নামে ট্রেন চলবে। গতকাল শনিবার মাদারীপুরের শিবচর রেল স্টেশনে এক অনুষ্ঠানে ট্রেন দুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম। এরপর পরীক্ষামূলক ট্রেনটি ঢাকায় আসে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে এই ট্রেন কমলাপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। এ রুটে দেওয়া হবে নতুন ট্রেন। সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে শুক্রবার।

আরো পড়ুন: কোন রুটে কত বাড়তি ভাড়া দিতে হবে ট্রেনে

ভাড়া যে কারণে বেশি: ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচলকারী ভাঙ্গা কমিউটার ট্রেনটির ভাড়া যাত্রীপ্রতি ২২৫ টাকা। ট্রেনটি মাঝের তিন স্টেশন মাওয়া, পদ্মা (জাজিরা) ও শিবচর স্টেশনে থামবে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত ৪৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হলেও ১০ কিলোমিটার পরের স্টেশন পদ্মা সেতুর অন্য প্রান্তের জাজিরা এলাকার পদ্মা স্টেশনের ভাড়া ১৯৫ টাকা। অর্থাৎ সেতু পার হতে গেলেই গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ১৫০ টাকা। এরপর পরের স্টেশন শিবচর ২০৫ টাকা আর সর্বশেষ ভাঙ্গা স্টেশনে ২২৫ টাকা। অন্যদিকে ভাঙ্গা থেকে রাজবাড়ী রুটে চলাচলকারী চন্দনা কমিউটার ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা। অর্থাৎ রাজবাড়ী থেকে এই দুই ট্রেনে ঢাকা ফিরতে ২৯০ টাকা খরচ হবে যাত্রীদের।

রেলসূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা রুটে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস ও মধুমতী এক্সপ্রেস চলাচল করে। এই ট্রেন তিনটিতে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যেতে শোভন চেয়ারে লাগে ৩০৫ টাকা, ট্রেনগুলো ভাঙ্গার ননস্টপ যাত্রীদের ঢাকায় পৌঁছে দেয়; কিন্তু একাধিক স্টপেজের কমিউটার ট্রেনের নিচের সারির শোভন কোচে যেতে নির্ধারণ করা হয়েছে ২২৫ টাকা ভাড়া। ভাঙ্গা ও চন্দনা কমিউটার ট্রেন যে রেক দিয়ে চলছে তার ইঞ্জিন ও কোচ নিম্নমানের, যেটা দিয়ে ঢাকা আসতে ২২৫ টাকা ভাড়াকে অতিরিক্ত বলছেন যাত্রীরা।

উদ্বোধনী ট্রেনে সাংবাদিকদের বহন করা বগিতে ঢাকা ঘুরতে আসছিলেন সবুজ হোসেন। ট্রেনে নিয়মিত ঢাকা যেতে পেরে খুশি হলেও ভাড়ার কথা শুনে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাসে ঢাকা যেতে ৩০০ টাকা লাগে; কিন্তু ট্রেনে যদি কম লাগতো তাহলে ভালো হতো। অনেকে ট্রেনে করে বাড়ি থেকেই অফিসে যাতায়াত করতে পারতেন। লোকাল ট্রেনে এত ভাড়া রাখা ঠিক হয়নি।

বাসের সঙ্গে পদ্মা সেতুর টোলের তুলনামূলক রেখা টেনে দেখা যায়, বাসের চেয়ে ট্রেনের যাত্রীদের টোল দিতে হচ্ছে বেশি। ৩১ সিটের একটি বাসের যেখানে ১৪০০ টাকা ভাড়া দিতে হয় সেখানে জনপ্রতি টোল পড়ে ৪৫ টাকা কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ে নিম্নবিত্তের শোভন শ্রেণির যাত্রীদের থেকেই নিচ্ছে ১৫০ টাকা। এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরন শিশির বলেন, পদ্মা সেতুর টোলের কারণে ভাড়া বেড়েছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে ভাঙ্গা থেকে খুলনা, যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত আরেকটি ট্রেন চালু হবে। ওই ট্রেন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।