গিয়াস উদ্দিন সেলিম নির্মিত সিনেমা ‘কাজল রেখা’। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ১১ এপ্রিল সারা দেশে মুক্তি পায় এটি। দুই সপ্তাহ ধরে মাল্টিপ্লেক্সে প্রদর্শিত হচ্ছে সিনেমাটি।
ময়মনসিংহ গীতিকা ‘কাজল রেখা’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের এই সিনেমা এবার জায়গা পেলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা নিজেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ‘কাজল রেখা’ সিনেমা। এসব তথ্য উল্লেখ করে গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘রিলিজের সপ্তাহ খানেক পর ইতিহাস বিভাগ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা কয়দিন আগে সিনেমাটি দেখেছেন। এরপর এটিকে তাদের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন।’
প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা হয় ঢাবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও সংশ্লিষ্ট কোর্সের শিক্ষক আকসাদুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, মধ্যযুগের বাংলা সংস্কৃতির যেসব উৎস রয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো মৈমনসিং গীতিকা। সেটারই একটি অংশ হলো কাজল রেখা। যা এখন সিনেমায় রূপ পেয়েছে। তো ইতিহাসের এই উৎসের একটা উদাহরণ হিসেবে আমরা ‘কাজলরেখা’ সিনেমাটিকে অন্তর্ভুক্ত করেছি।
আকসাদুল আলম জানান, এর আগে একই প্রক্রিয়ায় এন রাশেদ চৌধুরী নির্মিত ‘চন্দ্রাবতী কথা’ সিনেমা ও ‘বেহুলার ভাসান’ মঞ্চনাটক তাদের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। নতুন করে ‘কাজলরেখা’ আসায় সেগুলোর স্থানে এটিকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। মধ্যযুগের বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি ঘিরে আগামীতে অন্য কোনো সিনেমা বা নাটক এলে সেটাকেও বিবেচনায় নেবেন বলে জানান অধ্যাপক আকসাদুল আলম।
‘কাজলরেখা’ সিনেমাটি ঠিক কীভাবে পাঠদানের অংশ হবে, সেটাও পরিষ্কার করেন আকসাদুল আলম। তিনি বলেন, মৈমনসিং গীতিকা তো আমরা বরাবরই শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে আসছি। যেহেতু ‘কাজল রেখা’ সিনেমাটি এই গীতিকা অবলম্বনে নির্মিত, তাই এটাকে একটা উদাহরণ হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সিনেমাটি দেখবে; চারশত বছর আগের প্রেক্ষাপট ঠিকঠাক ফুটে উঠেছে কি না, শিল্পীদের পোশাক, সাজসজ্জা ইত্যাদির সমন্বয় হয়েছে কি না, এসব অ্যাকাডেমিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পর্যালোচনা করবে। এরপর পরীক্ষায় যদি এটা নিয়ে প্রশ্ন আসে, সেই অনুযায়ী উত্তর দেবে, নম্বর পাবে।
‘কাজল রেখা’ সিনেমার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। এছাড়াও আছেন শরিফুল রাজ, খায়রুল বাসার, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, সাদিয়া আয়মান, আজাদ আবুল কালাম, গাউসুল আলম শাওন প্রমুখ।