সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীত-কলা বিভাগের দায়িত্ব যিনি একা হাতে সামলাচ্ছেন তাঁর নাম দেবী সরস্বতী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে মর্ত্যলোকে পূজিতা হন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার ঘরণী দেবী সরস্বতী।
হিন্দুধর্মাবলম্বীরা মূর্তির মাধ্যমে দেবতার পূজা করে থাকেন। মূর্তিতে দেবতার আবাহন ও প্রাণপ্রতিষ্ঠা করার পরই হিন্দুরা সেই মূর্তিকে পূজার যোগ্য মনে করেন। ধর্মীয় সংস্কার বা শাস্ত্রের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট দেবতার মূর্তি নির্মিত হয়ে থাকে।
পঞ্জিকা মতে, প্রতি বছর মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী দেবীর পূজা করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তাই বাড়ি, মন্দিরে প্রতিমা স্থাপন করা হয়।
পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার খাটরা সার্বজনীন কালিবাড়ী মন্দির প্রাঙ্গন, সাতপাড়, বৌলতলী বাজার কোটালিপাড়া উপজেলার কালিগঞ্জ হাটে, কাশিয়ানি উপজেলার রামদিয়া বাজার, মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর, কালিনগর, জলিরপাড়, বাটিকামারি বাজারে এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ডুমুরিয়ায় সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে।
এখানে ছোট বড় মিলিয়ে হাজার হাজার প্রতিমা নিয়ে বিক্রি করতে এসেছেন মৃৎশিল্পীরা। সবচেয়ে বেশি হাট বসেছে কোটালীপাড়া উপজেলায়। এ উপজেলার পয়সার হাট, রামনগর, রাধাগঞ্জ, ধারাবাশাইল, ভাঙ্গার হাট, ঘাঘর, হিরণ বাজারসহ বিভিন্ন হাটে-বাজারে প্রতিমা বিক্রির ধুম পড়েছে। প্রতিমা বিক্রি বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চলবে।
প্রতিমাসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও নৌকায় করে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা বিক্রির জন্য ভোরেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন।
মুকসুদপুর উপজেলার জলিরড়পাড় বাজার থেকে বিভূতি পাল দৈনিক শিক্ষাবার্তা ডটকমকে বলেন, প্রতিবছর এ বাজারে প্রতিমা নিয়ে আসি বিক্রি করতে। এবার ভালো দামে প্রতিমা বিক্রি করতে পারছি।
কোটালীপাড়ার মঠবাড়ীর রামপাল দৈনিক শিক্ষাবার্তা ডটকমকে বলেন, সরস্বতী প্রতিমা ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিমার দামও বেড়েছে।
বিদ্যাদেবীকে সাজানোর উপকরণ বিক্রেতা সঞ্জয় ফোলিয়া দৈনিক শিক্ষাবার্তা ডটকমকে বলেন, প্রতিমা সাজানোর ফুল মালা ও পূজার অন্যান্য উপকরণগুলো বিক্রি হচ্ছে বেশি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের চয়ন বিশ্বাস সাতপাড় হাট থেকে প্রতিমা ক্রয় করেছেন ১ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে। তিনি জানান, বড় প্রতিমা কিনে তিনি খুব খুশি।