বান্ধবীর সাথে রাত কাটাতে গিয়ে বরখাস্ত এসআই জাহিদ

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা স82854_pabna  S I Jahid, Pabnaদর থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম কথিত বান্ধবীর সাথে রাত কাটাতে গিয়ে  তার নামে ইস্যুকৃত সরকারি একটি পিস্তল ও আট রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি ম্যাগজিন হারিয়ে ফেলেছেন। ঘটনার সাত দিনেও অস্ত্রটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তবে কথিত বান্ধবীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনার দুই দিন পর একটি চুরি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৪৯। এসআই জাহিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।মামলার বাদি পাবনা সদর থানার এসআই নাজমুল হকের দায়েরকৃত এজহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ অক্টোবর সোমবার ডিউটি শেষে এসআই জাহিদুল ইসলাম রাত ৯টার দিকে পূর্ব পরিচিত বান্ধবী ফরিদা ইয়াসমিনকে সাথে পাবনা শহরের শালগাড়িয়া টিবি হাসপাতালের পিছনের একটি বাসায় রাতযাপন করে। ফরিদা ইয়াসমিন সিরাজগঞ্জ শহরের জানপুর ব্যাংকপাড়ার শহিদুল ইসলামের স্ত্রী বলে জানা গেছে। রাতের কোনো এক সময় আট রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি ম্যাগজিনসহ একটি পিস্তল হারিয়ে যায়। বাড়িওয়ালার ছেলে কাজী সালাউদ্দিন সুজন ও কথিত বান্ধবীকে আটক করে থানায় দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত কাজী সালাউদ্দিন সুজনের মা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মরত সাজেদা খাতুন রিনা বলেন, একই বিভাগে চাকরি করার সূত্রে সিরাজগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মরত ফরিদা ইয়াসমিনের সাথে পাঁচ বছর আগে তার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে মাঝে মধ্যে তার সাথে ফোনালাপ হতো। এরই একপর্যায়ে ২৭ অক্টোবর সকালে ফরিদা জানান, তার স্বামী শহিদুর রহমান পাবনায় বদলি হয়েছেন। বাসা খুঁজতে তার বাড়িতে এক রাত অবস্থান করার অনুমতি চান। এতে তিনি রাজি হলে ফরিদা সন্ধ্যা ৭টার দিকে একাকি তার বাসায় আসেন। স্বামীর কথা জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন, প্রথম এসেছেন, তাই কিছু ফলমূল নিয়ে আসছেন তিনি।

সাজেদা খাতুন রিনা বলেন, এরপর রাত ৯টার দিকে এক ভদ্রলোক তার বাসায় এসে ফরিদা তাকে তার স্বামী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। এর আগে কখনো তার স্বামীর সাথে পরিচয় হয়নি। রাতে আমি যথাসাধ্য অতিথি আপ্যায়নের পর বাসার একটি রুমে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সকালে ওই ঘরে চেঁচামেচির শব্দ শুনে দরজায় নক করলে দরজা খুলে দেন। তখন ফরিদার স্বামী জানান যে, তার পিস্তল হারিয়ে গেছে। পিস্তলের কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি তার আসল পরিচয় দেন, বলেন ফরিদা তার স্ত্রী নয় বান্ধবী। পরে থানা থেকে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার ছেলেকে নিয়ে যান। অস্ত্রটি উদ্ধার করে দেয়ার কথা বলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। তার ছেলেকে বিনা অপরাধে দুই দিন পুলিশি হেফাজতে রেখে নির্যাতন শেষে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন। বিষয়টি সংবাদকর্মীদের অবহিত করা হলে তার ছেলেকে গুম করার হুমকি দেয় থানা পুলিশ।

পাবনা সদর থানার এসআই জাহিদের অন্য নারীর সাথে রাত কাটানোর সময় অস্ত্র হারানোর বিষয়টি জানাজানি হলে শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই জাহিদুল ইসলাম তার ব্যবহৃত সরকারী পিস্তল হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে কথিত বান্ধবীকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অন্যের বাড়িতে রাত কাটানোর বিষয়ে কথা বলতেই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ ব্যাপারে পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী হানিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হারিয়ে যাওয়া অস্ত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। এসআই জাহিদের বান্ধবীসহ এক যুবককে সন্দেহমূলকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে জানালে তিনি ‘বাইরে আছি পরে কথা বলছি’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

পাবনার পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসআই জাহিদকে দায়িত্বহীনতার অপরাধে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্যে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

সুত্র: নয়াদিগন্ত

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।