বাতিল এইচএসসির ফল কিভাবে জানাল শিক্ষাবোর্ড

Image

এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং) হবে কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থীর আন্দোলনে মাঝপথে বাতিল করা এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফল। আগে পরিকল্পনা করা হয়েছিল যে শিক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে মিলিয়ে ফল প্রকাশ করা হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, কেবল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল প্রকাশের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেএসসি পরীক্ষার ফল বিবেচনায় নেওয়া হবে না। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত হবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল।
গত মাসে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে কিছু পরীক্ষার্থী বিক্ষোভ ও ঘেরাও করলে এবারের এইচএসসি বা সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফলাফল কীভাবে প্রকাশ করা হবে, সে বিষয়ে সম্ভাব্য প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল শিক্ষা বোর্ডগুলো। এখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে ফলাফল তৈরি করা হবে।

এ বিষয়ে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, যে কয়টা বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে। যেগুলোর পরীক্ষা হয়নি সেগুলোর এসএসসিতে যে নম্বর পেয়েছেন সেটাই সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন হবে।

তিনি বলেন, বিষয় ম্যাপিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা আছে। এ প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিলেন, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে বিষয় ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বর বিবেচনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

এদিকে কবে নাগাদ ফল প্রকাশ করা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আবুল বাশার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আশা করছি অক্টোবরের মাঝামাঝি ফল প্রকাশ করতে পারবো।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম দফায় প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।

আরো পড়ুন: ভোটার তালিকা প্রস্তুত হলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

সবশেষ নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় গত ১১ আগস্ট। এর মধ্যে পরীক্ষার্থীরা স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে এসব পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিলো জুন মাসের ৩০ তারিখে। ১৬ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা ঠিকঠাকভাবেই সম্পন্ন হয়। কিন্তু কোটা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ১৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা এবং পরে ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়। এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় শেখ হাসিনা সরকার।

সামগ্রিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে বাকি পরীক্ষাগুলোর তারিখ বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়। সবশেষ নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ১১ আগস্ট। এর মধ্যে পরীক্ষার্থীরা স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০ আগস্ট সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরবর্তীতে এসব পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা প্রশাসন।

চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডের অধীনে মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে করোনাকালে এভাবে বিষয় ম্যাপিং করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় সবাই পাস করেন।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedin
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।