বন্যার কারণে দেশের উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে গত এপ্রিল-জুনেও বন্যায় বন্ধ হয়েছিল সহ্রসাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বন্যা কবলিত জেলাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তলিয়ে যাওয়া ছাড়াও দুর্গতদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে বগুড়ায় বাঁধের ওপর চলছে কিছু স্কুলের পাঠদান। এর বাইরে আর কোথাও আপদকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই।
জেলা প্রশাসকরা বলছেন, বন্যার পানি নেমে গেলে স্কুল-কলেজগুলো মেরামত করে বাড়তি ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন তারা। তবে সে বিষয়েও স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা জানাতে পারেননি কেউ।
বন্যায় এরইমধ্যে ২২ জেলায় তিন হাজার ৫২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহম্মদ।
তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাটে পানি নামতে থাকায় অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াজ আহম্মদ বলেন, “প্রতিটা জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সে জেলার সমস্যা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কারও বই নষ্ট হয়ে গেলে তাদের বই সরবরাহ করা হবে। অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার দরকার হলে তা নেওয়া হবে।”
এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে জামালপুর জেলায়। সেখানেই বন্যায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির চিত্র উঠে এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বন্যার পানি ওঠায় এ পর্যন্ত জেলার ৯১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বন্যা শেষ হলে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম বলছেন, বন্যার পানি কমতে থাকায় বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমছে।
তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, “পানি ওঠার কারণে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়নি, বন্যা দু্র্গতরা আশ্রয় নেওয়ায় ৩৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এতদিন।
“এখন পানি কিছুটা কমছে, ২০০ এর মতো প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। আমরা অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করে এ ধাক্কাটা সামলে নেব।”
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল জানান, বন্যার পানি ওঠায় তার জেলার ২১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ আছে। মোট ৯০টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।