আগামী বছরের জন্য ৪০ কোটি নতুন বই ছাপাবে সরকার। অথচ বছর শেষ হতে দুই মাস বাকি থাকলেও এখনও ছাপানোর কাজই শুরু হয়নি। এমনকি শেষ হয়নি মাধ্যমিকের দরপত্রের প্রক্রিয়াও। মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ অবস্থায় মার্চের আগে সব বই শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করা হয়। ২০১২ সালের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বই ছাপানো হবে। সেই সঙ্গে বই পরিমার্জনেরও সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে পরিমার্জনের কাজ শেষ হয়েছে গত সপ্তাহে। আর আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাওয়ায় বইয়ের সংখ্য বেড়েছে ৯ কোটি। অন্যান্য বছর জুলাইয়ে বই ছাপানোর কাজ শুরু হলেও নির্দিষ্ট সময়ে বই দেওয়া সম্ভব হয় না। অথচ এ বছর এখন পর্যন্ত মাধ্যমিকের বইয়ের দরপত্রই দেওয়া হয়নি।
মুদ্রণ মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘নতুন বই ছাপানোর যে পুরো প্রক্রিয়া তা সম্পন্ন করতে প্রশাসনের যে আকাঙ্ক্ষা বা গুরুত্ব প্রয়োজন তা অনুপস্থিত দেখছি। এ কারণেই হতাশা নিয়ে বলছি, ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই ছাপানোর কাজ শেষ হবে না।’
শিক্ষা গবেষকেরা বলছেন, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ধীরগতির জন্য এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
শিক্ষা গবেষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারের এখন উচিত মিনিমাম চেঞ্জ করে টেক্সট ম্যাটেরিয়ালগুলো ভালোভাবে প্রিন্ট করে সঠিক সময়ের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে পৌঁছানো।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, বই নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়ার জন্য কাজ চলছে। চলতি সপ্তাহেই প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ শুরু হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান একে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘বই ছাপানোর বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দশম শ্রেণির বইয়ে। দ্রুত বই ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছি আমরা।’
এবার বইয়ের কাগজের ওজন ও উজ্জ্বলতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৭০ গ্রাম থেকে বাড়িয়ে কাগজের ওজন করা হয়েছে ৮০ গ্রাম। আর উজ্জ্বলতা ৮০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সুত্র: ইনডিপেনডেন্ট টিভি