প্রাথমিক স্তরের ৬০ হাজার বই বাতিল

ডেস্ক,১৬ ডিসেম্বর:
আগামী শিক্ষাবর্ষে বিতরণের জন্য মানসম্মত না হওয়ায় প্রাথমিক স্তরের ৬০ হাজার বই বাতিল করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে পাঠানো বই যাচাই-বাছাই করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একই সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণে মুদ্রণের অগ্রগতি ও গুণগত মান বজায় রাখতে মনিটরিং জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালালোচনা সংক্রান্ত সভা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাপতি মো. জাকির হোসেন।

সভা সূত্র জানায়, সভার সভাপতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তকের যথাযথ মান বজায় রেখে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ এবং যথাসময়ে দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছানো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) জানান, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ১০ কোটি ২৫ লক্ষাধিক পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য ৩৯টি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৬০ শতাংশ মুদ্রণ কাজ শেষ হয়েছে এবং ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ বই মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।

সভায় প্রতিমন্ত্রী জানান, সরবরাহ করা বইয়ের মধ্যে কিছু সংখ্যক বই মানসম্মত নয় মর্মে মাঠ পর্যায় থেকে জানা যায়। যেমন- কোনো বইয়ের কাগজের মান ভালো নয়, আবার কোনো কোনো বইয়ের মুদ্রণ সঠিকভাবে হয়নি। এ বিষয়ে পাঠ্যপুস্তকের মান যাচাইয়ের জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ব্যুরো ভেরিটাস বাংলাদেশ প্রাইভেট লি. এর প্রতিনিধির কাছে বিস্তারিত জানতে চান।

ব্যুরো ভেরিটাস প্রতিনিধি মো. আফজাল কবির ভুইয়া জানান, মুদ্রণ করা প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে একজন করে পরিদর্শক নিয়োজিত আছেন। তারা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থেকে মুদ্রণ কোয়ালিটি নিশ্চিত করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে ব্যুরো ভেরিটাসের প্রতিনিধি থাকেন না। তাছাড়া, একাধিক প্রতিষ্ঠানে একজন প্রতিনিধি থাকার বিষয়েও মাঠ পর্যায় থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে সচিব ব্যুরো ভেরিটাসের প্রতিনিধিকে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শকদের প্রত্যেকের নাম, মোবাইল নম্বরসহ তালিকা অবিলম্বে মন্ত্রণালয়, ডিপিই ও এনসিটিবিকে দেওয়ার অনুরোধ করেন।

সভায় সচিব বলেন, মানসম্মত বইয়ের জন্য বাস্তবায়নকালীন তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন। সেজন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং এনসিটিবির সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে ব্যুরো ভেরিটাসের পরিদর্শকদের কাজের তদারকি করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর জানুয়ারির ১ তারিখে বই উৎসব পালন করা হয়। সে লক্ষ্যে এবছরও যেন সময়মতো সারাদেশে নতুন বই পৌঁছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) জানান, মুদ্রণ কাজ তদারকির জন্য মন্ত্রণালয় হতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকার বিভাগীয় উপপরিচালকের মাধ্যমে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে একজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে মুদ্রণ কার্যক্রম তদারকি করছেন এবং ইতোমধ্যে ৬০ হাজার বই বাতিল করা হয়েছে।

সভায় পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের অগ্রগতি ও গুণগত মান এবং বিতরণের অগ্রগতির বিষয়ে এনসিটিবিকে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত মনিটরিং কমিটির কার্যক্রম জোরদার, মুদ্রণ কাজ তদারকির জন্য ডিপিই এবং এনসিটিবি মনিটরিং কার্যক্রম বেগবান করবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিয়মিত প্রতিবেদনও পাঠাবে। এনসিটিবি মুদ্রণ সামগ্রী বুঝে নিয়ে ডিপিইর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিবেদন দেবে বলে জানানো হয়।

বই মুদ্রণকালীন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করে বইয়ের গুণগত মান বজায় রেখে মুদ্রণ কার্যক্রম সম্পাদন করতে এনসিটিবি ও ডিপিই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানায় সভা সূত্র।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বই সরবরাহ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে সব বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসারদের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় করবে। এছাড়াও বই বিতরণের মহাপরিচালক ছাত্র-ছাত্রীদের তালিকা প্রণয়নসহ অন্য সব কার্যক্রম সম্পাদন করবেন এবং শিক্ষার্থীর কাছে নির্দিষ্ট সময়ে মানসম্পন্ন বই পৌঁছানো নিশ্চিত করবেন।

সুত্রঃ গো নিউজ

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।