৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা আগামী ২০ নভেম্বর শুরু হবে। পরীক্ষা চলবে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত।
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভায় আজ রবিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনীর সবগুলো পরীক্ষা সকাল ১১টায় শুরু হয়ে চলবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।
এবার প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষায় সম্ভাব্য মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৪ লাখ ৪৫ হাজার জানিয়ে গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মোট শিক্ষার্থীর ৩১ লাখ ২৫ হাজার প্রাথমিক সমাপনী ও ৩ লাখ ২০ হাজার ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা দেবে।’
কয়েক মাস আগে প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতকরণ ও পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর গত ২১ জুন পঞ্চমের সমাপনী পরীক্ষা এ বছর থেকেই বাতিল হয়ে অষ্টম শ্রেণিতে প্রাথমিক সমাপনী হবে বলেও জানান গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
কিন্তু গত ২৭ জুন এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উঠলে মন্ত্রিসভা তা অনুমোদন না দিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উপস্থাপনের নির্দেশনা দেয়। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা ও অষ্টম শ্রেণির জেএসসি পরীক্ষা এ বছরও থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেয় দেশের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম মন্ত্রিসভা।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এবার অভিন্ন প্রশ্নপত্রে নয়, একই মানের আলাদা আলাদা প্রশ্নপত্রে আট বিভাগে পরীক্ষা হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফল ২৭ ডিসেম্বর মধ্যেই প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখও আমরা নির্ধারণ করেছি।’
পঞ্চম শ্রেণিতে সমাপনী পরীক্ষা এ বছরই শেষ কিনা-একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘পিইসি (পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক সমাপনী) বা জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত ক্যাবিনেট (মন্ত্রিসভা) থেকে হয়েছে। ক্যাবিনেট যতক্ষণ পর্যন্ত না এ পরীক্ষাগুলো পরিবর্তন করে ততক্ষণ পর্যন্ত এ পরীক্ষাগুলো যথারীতি আগের নিয়মে চলবে।’
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অন্যান্য বছরের মতো পরীক্ষার সময় ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে। পরীক্ষার ফিও আগের মতোই ৬০ টাকা থাকছে।
খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বী সেভেন্থ-ডে অ্যাডভেন্টিস্ট সম্প্রদায়ভুক্ত পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে শনিবার কোন পরীক্ষা রাখা হয়নি জানিয়ে সভায় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘এ বছরও প্রাথমিক সমাপনীর পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে মোট ৮২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুলে ও ৪৯ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী সাধারণ কোটায় বৃত্তি পাবে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ৩০০ টাকা ও সাধারণ কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ২২৫ টাকা হারে ভাতা পাবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
পরীক্ষার বিস্তারিত সময়সূচি
প্রাথমিক সমাপনীতে ২০ নভেম্বর ইংরেজি, ২১ নভেম্বর বাংলা, ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক বিজ্ঞান, ২৪ নভেম্বর ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা ও ২৭ নভেম্বর গণিত পরীক্ষা হবে।
ইবতেদায়ি সমাপনীতে ২০ নভেম্বর ইংরেজি, ২১ নভেম্বর বাংলা, ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ২৩ নভেম্বর আরবি, ২৪ নভেম্বর কুরআন ও তাজবীদ এবং আকাঈদ ও ফিকহ্, ২৭ নভেম্বর গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় সচিব মো. হুমায়ুন খালিদ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন ভূঞাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।