নিজস্ব প্রতিবেদক,৮ এপ্রিল : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলিতে দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধে ডিজিটাল ব্যবস্থায় যাচ্ছে সরকার। পরিবর্তিত এ ব্যবস্থায় ঘরে বসেই অনলাইনে বদলির আবেদন করতে পারবেন শিক্ষকরা। আর তদবির ছাড়াই প্রাপ্যতা অনুযায়ী বদলি কার্যক্রম চালু থাকবে। শিগগিরই অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে নির্দেশ দেবে মন্ত্রণালয়। এতে বন্ধ হবে তদবির বাণিজ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন শিক্ষাবার্তাকে বলেন, ‘শিক্ষকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন তাই আমরা অনলাইনে বদলির ব্যবস্থা করবো। ঘরে বসেই শিক্ষকরা আবেদন জমা দিতে পারবেন। ঢাকায় এসে দৌড়াদৌড়ির দরকার হবে না। প্রাপ্যতা সাপেক্ষে শিক্ষকরা বদলি হতে পারবেন।’
মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদলির শেষ সময় ছিল গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত। তার এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রতিদিন শত শত শিক্ষক ভিড় করেন অধিদফতরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অধিদফতরের মহাপরিচালক শিক্ষকদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘যাদের তদবিরের কেউ নেই, তারাও বদলি হতে পারবেন। আমার ওপর ভরসা রাখেন।’
তবে মহাপরিচালকের ওপর ভরসা হারিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেছেন বদলিতে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এক ডজনের মতো মন্ত্রীসহ প্রভাবশালীদের সুপারিশ আমলে নিয়ে বদলি করা হচ্ছে। তাদের অভিযোগ শূন্যপদের অনুমোদন নিয়েও দিনের পর দিন অপেক্ষা করা শিক্ষকরা বদলি হতে পারছেন না। আবার যাদের শূন্যপদের অনুমোদন নেই তারাও বদলি হচ্ছেন। আবেদন করার দুই দিনের মধ্যেও অনেককে বদলি করা হয়েছে।
মহাপরিচালকের কাছে শিক্ষকরা গত কয়েকদিন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে এসব অভিযোগ করেন। গত ২ এপ্রিল একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে তার আবেদন হারিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন সচিবের কাছে। একই অভিযোগ করেছেন অনেকেই। আবার টাকা দিয়ে ফাইল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও শিক্ষক এবং তাদের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ এফ মঞ্জুর কাদির বলেন, ‘শিক্ষক বদলিতে কোনও দুর্নীতি হবে না। তবে বদলি করা পদের চেয়ে আবেদন অনেক বেশি।’ মন্ত্রী ও প্রভাবশালীদের তদবিরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদবির তো থাকতেই পারে। তবে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি প্রাপ্যতা অনুযায়ী বদলি করার বিষয়ে।
এসব পরিস্থিতি সামাল দিতেই অনলাইন পদ্ধতিতে সহকারী শিক্ষক বদলি করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিগগিরই অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদন করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে নির্দেশ দেবে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদন জমা নেওয়া হলে শিক্ষকদের ভোগান্তি কমবে। বন্ধ হবে দুর্নীতি ও তদবির বাণিজ্য।