ডেস্ক,২৫ জুলাই:
করোনায় থমকে আছে বিশ্ব। কবে মুক্তি মিলবে তা অজানা। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এ ভাইরাসের প্রভাব দেখা গেছে। অনেক দেশেই করোনাভাইরাসের প্রভাবে অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যখাতসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রের অবস্থাই শোচনীয়।
উন্নত দেশে করোনার যে ধরনের প্রভাব পড়েছে সেখানে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা আরো কঠিন। সংশ্লিষ্টরা শিক্ষাখাতে চলমান সংকট মোকাবিলায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
আরো খবর:
প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল নিয়ে জটিলতা নিরসনের দাবি
দেশে করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফার বৃদ্ধির পর আগামী ৬ আগস্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি আসেনি।
সূত্রমতে, সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবছে না সরকার।
এদিকে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর গত ৭ এপ্রিল থেকে সংসদ টেলিভিশনে প্রাথমিক ক্লাস সম্প্রচারিত হচ্ছে। তবে এতে শতভাগ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
এমন অবস্থায় প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত তথা ছোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনা পরিস্থিতির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে আলাদা করে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়।
ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সার্বিক দিক মূল্যায়ন করে খুব শিগগিরই এটি কার্যকর করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন জানান, দীর্ঘ বন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তবুও অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সবার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুনভাবে চিন্তা করতে হচ্ছে আমাদের।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান খোলার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা যাতে খুব দ্রুত তাদের সিলেবাস শেষ করতে পারে সেজন্য একটা পরিকল্পনা রয়েছে। শ্রেণিভিত্তিক মৌলিক সক্ষমতা বা কোর কম্পিটেন্ট অর্জনে বিষয় চিহ্নিত করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করার জন্য জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বছরের শুরুতেই সারা বছরের পাঠপরিকল্পনা নির্ধারণ করা ছিল। সংশোধিত সিলেবাস সেটাকেও রিভাইস করতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ জানান, শিক্ষাবর্ষ যাতে পিছিয়ে না যায় সে লক্ষ্যে এ ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সাধারণ ছুটি শেষ হলে ওই সিলেবাস সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া হতে পারে। তবে ছুটি যদি সেপ্টেম্বরের পরও দীর্ঘ হয় তাহলে শিক্ষাবর্ষ পরবর্তী বছরের দুই এক মাস লাগতে পারে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর পরের ক্লাসের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি হবে। দুইটি স্তরে এটি করা হবে। প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য একভাবে। আর পঞ্চম শ্রেণির জন্য আলাদাভাবে করা হবে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টারগুলোর প্রতি বেশি জোর দেয়া হবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হলে সে আলোকে ক্লাস হবে এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।