প্রাথমিকে সাপ্তাহিক ছুটি এক দিন
নিজস্ব প্রতিবেদক,১৫ সেপ্টেম্বর:
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দেশের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রাক্–প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন (শিখনকালীন) বেশি হবে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। পরবর্তী শ্রেণিগুলোর মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও ধারাবাহিক শিখন কার্যক্রম—দুটোই থাকছে।
নতুন নিয়মে এখনকার মতো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে না। শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। প্রতি বর্ষ শেষে বোর্ডের অধীনে এই পরীক্ষা হবে। এরপর এই দুই পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে এইচএসসির চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত যে নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার, তাতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় এমন অনেক পরিবর্তনের কথা রয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখাটি গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দেওয়ার পর এখন সেটির বাস্তবায়ন কৌশল নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুযায়ী,১ম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বছরে মোট শিখন ঘণ্টা রাখা হয়েছে ৬৮৪ এবং চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে শিখন ঘণ্টা ৮৫৫। প্রাথমিকে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে এক দিন। অন্যদিকে মাধ্যমিক স্তরে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বছরে শিখন ঘণ্টা ১ হাজার ৫৫, নবম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১ হাজার ১১৭ এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে শিখন ঘণ্টা ১ হাজার ১৬৭। তবে জাতীয় দিবসগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে এবং এসব দিবস পালনের কর্মসূচি শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান দৈনিক শিক্ষাবার্তাকে বলেন, ধীরে ধীরে ধারাবাহিক মূল্যায়নের দিকেই যেতেই হবে। এটি ভালো দিক। কিন্তু কাজটি করতে হবে আস্থা এবং বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে। তবে যেখানে পরীক্ষা কমানোর কথা বলা হচ্ছে, সেখানে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পরপর তিনটি পাবলিক পরীক্ষা রাখার বিষয়টি বোধগম্য হচ্ছে না। এ জন্য প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আরও পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।