প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ডিসেম্বরে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা ডিসেম্বরের মধ্যে নেয়া শুরু হবে। জানুয়ারির মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শেষ এবং ফেব্রুয়ারি মধ্যে ফল প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। একসঙ্গে সবজেলায় পরীক্ষা না হয়ে ৩/৪টি করে জেলায় একসঙ্গে পরীক্ষা হবে। এবার রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থীর আবেদন ও পরীক্ষার হল সংকটের কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার শিক্ষাবার্তাকে  বলেন, মামলার কারণে দীর্ঘদিন রাজস্ব খাতের শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যায়নি। অনেক পদ শূন্য। এ মাসের মধ্যেই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর চিন্তাভাবনা ছিল। কিন্তু ওএমআর ফরমসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি কেনাকাটায় সরকারি ক্রয় আইন (পিপিআর) অনুসরণ করতে গিয়ে আমাদের গতি একটু কমে যাচ্ছে। তাছাড়া একসঙ্গে সারা দেশে পরীক্ষা নেয়া যাচ্ছে না। নভেম্বর মাসজুড়ে দুটি বড় পরীক্ষা আছে। তাই পরীক্ষা হল পাওয়া যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে পরীক্ষা ডিসেম্বরে চলে যাচ্ছে। হল পাওয়া সাপেক্ষে ৩/৪টি করে জেলার পরীক্ষা একসঙ্গে নেয়া হবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগে ৩০ জুলাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ১-৩০ আগস্ট অনলাইনে আবেদন নেয়া হয়। মোট ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭ জন আবেদন করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) কর্মকর্তারা বলছেন, এর আগে সর্বশেষ নিয়োগে প্রায় ১২ লাখ প্রার্থী আবেদন করেছিল। সে হিসাবে এবার প্রার্থী দ্বিগুণ।

কর্মকর্তারা আরও জানান, সর্বশেষ নিয়োগে সারা দেশে ৩ হাজার ৬৬২ কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হয়। এবার দ্বিগুণ প্রার্থী হওয়ায় কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। কিন্তু উপজেলা-জেলা পর্যায়ে এত কেন্দ্র পাওয়া কঠিন। এ কারণে উপজেলা সদরের কাছাকাছি পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্র নির্বাচনের দায়িত্ব জেলা প্রশাসকদের দেয়া হয়েছে। এখন জেলা প্রশাসকরা কেন্দ্র ঠিক করে দিলে দুই তা ততোধিক জেলায় একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়া হবে। এই পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় ২০ সেট প্রশ্নপত্র তৈরি করবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আগে এই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরিসহ পরীক্ষা গ্রহণে নেতৃত্ব দিত ডিপিই। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আরও কড়াকড়ি আনা এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে এবার প্রশ্ন নির্বাচন ও আসন বিন্যাস মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করে দেয়া হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রণয়ন করা হবে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, পরীক্ষার সময়সূচি, ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের আসন বিন্যাসের পদ্ধতি উন্নয়ন বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন  শিক্ষাবার্তাকে বলেন, পরীক্ষার ব্যাপারে বুয়েটের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ওএমআর ফরম কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়াতে এবার উপজেলা সদরের পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। কেন্দ্র নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে দেয়া হয়েছে। তারা প্রতিটি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্র বৃদ্ধি ও পরীক্ষা আয়োজনের জন্য সময় নির্ধারণ করবে। এরপর নিয়োগ পরীক্ষার সময় ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে যদি সব জেলায় একসঙ্গে কেন্দ্র খালি না পাওয়া যায় তবে কয়েকটি জেলায় সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা হতে পারে।

আকরাম আল-হোসেন আরও বলেন, এবার তিন ধাপের পরীক্ষার মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার চিন্তা ছিল। কিন্তু সময়স্বল্পতার কারণে আগের মতোই দুই স্তরের পরীক্ষায় নিয়োগ করা হবে। সে অনুযায়ী ৮০ নম্বরে এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষার পর ২০ নম্বরে ভাইভা নেয়া হবে।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।