নিউজ ডেস্ক,২ জানুয়ারী ২০২৩: পাঠ্যবই ছাপানোর জন্য মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেরিতে চুক্তি হওয়া, কাগজ সংকট, পাল্প সংকট, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, পাঠ্যবই ছাপা বাদ দিয়ে নোট-গাইড ছাপানো ইত্যাদি কারণে এবার সময়মতো সব বই ছাপা হয়নি।
বই ছাপা শেষ না হওয়া অবস্থায়ই রোববার সারাদেশে উদযাপন হয়েছে পাঠ্যপুস্তক দিবস-২০২৩।
এদিন দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে একটি বা দুটি বই। ছাপা শেষে সব বই হাতে পেতে শিক্ষার্থীদের আরও এক মাস অপেক্ষা করতে হবে।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত বই বিতরণ উৎসবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, পাঠক্রম অনুযায়ী সব বই পেতে এক মাস লাগবে। এ সময় তিনি প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতীকী হিসেবে বই তুলে দেন।
আরো পড়ুন:প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি আবার শুরু
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কাগজের অভাবে আমাদের সব বই প্রেস থেকে দিতে পারেনি। আগামী এক মাসের মধ্যে আমরা সব বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতে পারব বলে আশা করি।’
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ২ কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ২৪৫টি পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে। প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ৬৬ লাখ ২৯ হাজার ৮৪টি আমার বই রয়েছে। এছাড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির মোট ২ লাখ ১২ হাজার ১৭৭টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় জানান, রোববার অনুষ্ঠানে যে বই বিতরণ করা হয়েছে তা প্রতীকী। এজন্য সবার হাতে সব বই পৌঁছবে না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্ব স্ব স্কুল থেকে বই দেয়া হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজধানীর ৩৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের নতুন বই তুলে দেয়া হয়।
এই আয়োজনে ২০২২ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফ নারী ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্য; যারা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্ট থেকে উঠে এসেছে তাদেরও সংবর্ধনা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিশুদের মাঝে পাঠ্যবইকে আরও চিত্তাকর্ষক করে তোলার জন্য ২০১২ সাল থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সব বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক চার রঙের আকর্ষণীয় মুদ্রণ ও বাঁধাই করে শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।’
উৎসবের সভাপতি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক আগ্রহে ২০১০ সালে নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার যে মহতী যাত্রার সূচনা হয়েছিল আজ তা যুগ পেরিয়ে যুগান্তরে পদার্পণ করেছে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত।