‘তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর আদালতের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত যে নির্দেশনা দেবেন সেটি আমরা বাস্তবায়ন করব।’
সম্প্রতি এসব কথা বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
কবে নাগাদ তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিকের সচিব শিক্ষাবার্তাকে আরও বলেন, দেখুন আদালত কি নির্দেশনা দেবে সেটি আগাম বলার সুযোগ নেই। প্রতিবেদন দেখে আদালত যদি মনে করেন, প্রশ্নফাঁস হয়নি, তাহলে নির্দেশনা পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে কোনো দিনক্ষণ বলা সম্ভব নয়।
গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। অনুসন্ধান করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, তিনজন ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। যে তিনজন রিট করেছেন, তাদের কেউ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটিতে এনএসআই, গোয়েন্দা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন। এই প্রতিবেদনের আলোকে রেজাল্ট বাতিল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে জানানো হয়েছে। কাজেই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। একটি চক্র নিয়োগ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করতে রিট করেছিলেন। আমরা বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি। আদালত প্রতিবেদন দেখে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা দেবেন। আদালতের নির্দেশনা পেলে চলতি মাসেই তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, তৃতীয় ধাপের ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলার পরীক্ষা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল গত ২২ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হন। আর এই পরীক্ষা ২৯ মার্চ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৯ মার্চ এই দুই বিভাগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষার ফল গত ২১ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের (৩টি পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলা) লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল পরের দিন প্রকাশ করা হয়।