নিজস্ব প্রতিবেদক | ২২ জানুয়ারি, ২০১৯ : মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলা ও শিক্ষকদের অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রাথমিকের ছুটির তালিকা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ। রোববার (২০ জানুয়ারি) এ দাবি জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বরাবর রেজিস্টার্ড ডাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন পরিষদের আহ্বায়ক মো. সিদ্দিকুর রহমান।
চিঠিতে বলা হয়, শিশু শিক্ষার স্বার্থে প্রাথমিকে বেশি ছুটি বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের প্রত্যাশা নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগামী প্রজন্মকে গড়ে তোলা ও শিক্ষকদের অধিকার নিশ্চিত করতে ছুটির তালিকা সংশোধনের দাবি জানানো হয় চিঠিতে। চিঠিতে বলা হয়, পূর্ববর্তী বছরের মত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ছুটির তালিকায় জাতীয় দিবসগুলোকে ছুটি রাখা হয়েছে। আবার, তালিকার নিচে যথাযথ মর্যাদায় দিবসগুলো পালনের নির্দেশনা দেওয়া আছে। ছুটির তালিকায় ছুটি থাকলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিত থাকা বাধ্য নয়। ছুটি থাকায় স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীকে উপস্থিত করে দায় এড়ানোর মত জাতীয় দিবসগুলো পালন করেন শিক্ষকরা। জাতীয় দিবসগুলোর প্রেক্ষাপট শিক্ষার্থীদের বিশদভাবে জানানো প্রয়োজন। তাই, আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে ও শিক্ষার্থীদের মনে দেশের প্রতি মমত্ববোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় দিবসের ছুটিগুলো বাতিল করার দাবি জানানো হয় বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের চিঠিতে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষকেরা সাপ্তাহিক ছুটি শনিবার কর্মরত থাকায় তাদের ছুটি সরকারি কর্মচারীদের চেয়েও কম। সকল সরকারি কর্মচারী শ্রান্তি বিনোদন ভাতার ১ মাসের মূল বেতনের সাথে ১৫ দিনের বাড়তি ছুটি পান। প্রতি বছরের মতো ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দেও যেকোন অবকাশে শ্রান্তি বিনোদনের জন্য ১৫ দিন ছুটি রাখা হয়নি। বিগত বছরগুলোতে রমজান মাসের ছুটি থেকে ১৫ দিন শ্রান্তি বিনোদনের ছুটি দেখিয়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তর থেকে বিল পাস করানো হয়। হিজরি বছর ৩৫৫ দিন তাই ৩ বছর রমজানের ছুটি ৩০ দিন এগিয়ে আসে। বিধায় শিক্ষকেরা ৪ থেকে ৫ বছর পর পর শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পান। তাই রমজানের মাস ছাড়া যে কোন পর্বে জাতীয় ও বিশেষ দিবসের ছুটিগুলো যোগ করে ১৫ দিন ছুটি প্রদান করা এবং ৩ বছর পর পর শ্রান্তি বিনোদন ভাতা প্রদানের নিশ্চত করার দাবি জানানো হয় বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের চিঠিতে।
প্রধান শিক্ষকদের সংরক্ষিত ছুটি সাধারণত তাৎক্ষণিক বিশেষ কারণে দেওয়া হয়। কিন্তু তা অনুমোদন করতে হয় থানা বা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার থেকে। বাস্তবে সংরক্ষিত ছুটি দেয়ার ক্ষমতা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার। সংরক্ষিত ছুটি প্রদানে প্রধান শিক্ষকের ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। সবসময় থানা বা উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে তাৎক্ষণিক সংরক্ষিত ছুটি অনুমোদন সম্ভব নয়। অনুমোদনের পরিবর্তে থানা বা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের অবহিত করে প্রধান শিক্ষকদের সংরক্ষিত ছুটি প্রদানের ক্ষমতা দেয়ার দাবি জানানো হয় চিঠিতে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ছুটির তালিকায় দূর্গাপূজার ছুটি ৩ দিন। হিন্দু সম্প্রদায়ের দূর্গাপূজা সাধারণত ৫ দিন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। শিক্ষকদের মধ্যে এ ছুটি নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাই দূর্গা পূজায় ছুটি বৃদ্ধি করে হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রত্যাশা পূরণের দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ