নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রশ্নফাঁসে ব্যবহৃত ৩০০ মোবাইল নম্বর এ পর্যন্ত চিহ্নিত করেছে প্রশ্নফাঁস মূল্যায়ন কমিটি। এসব নম্বর কমিটির সদস্যদের মাঝে বণ্টন করে দেয়া হয়েছে।
এই নম্বরধারীদের অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী, যারা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে, কম্পিউটার সায়েন্সে পড়েন এবং এদের অভিভাবকরাও আছেন। এদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।
প্রশ্নফাঁস মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর এসব তথ্য জানিয়েছেন। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রশ্নফাঁস মূল্যায়ন কমিটির জরুরি সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সভায় পুলিশ, র্যাবের সদস্যসহ কমিটির ১১ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির প্রধান বলেন, যাদের মোবাইল নম্বর পাওয়া যাবে সে অভিভাবক হোক, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরীক্ষা আইন এবং সাইবার অপরাধের আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনও হতে পারে তারা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন সেখানে থেকে তাদের বহিষ্কার করাও হতে পারে। যেসব ফেসবুক লিঙ্ক, টেলিফোন নম্বরসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন আদান-প্রদান হয়েছে সেগুলো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আওতায় চলে এসেছে। দ্রুত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সচিব বলেন, প্রশ্নফাঁস নিয়ে এ পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে ১৪ জনকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী গ্রেফতার করেছে। অরো গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। শুধু গ্রেফতার নয়, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘প্রশ্নফাঁসের তথ্য পাওয়া গেছে, পরীক্ষা বাতিল করা হবে কি না তা শিক্ষামন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। কমিটির কাজ সবকিছু তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করা। আমরা সেটিই করবো’-বলেন তিনি।
আলমগীর বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কি না সে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। মিডিয়ায় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যেসব তথ্য এসেছে সেগুলো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে রোববার আবারো সভায় বসে প্রশ্নফাঁস মূল্যায়ন কমিটি একটি সুপারিশ চূড়ান্ত করবে।
তিনি বলেন, আজ কমিটি গঠনের কাগজ পাওয়ার পর প্রথম সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেয়া হয়েছে। আসলেই ফাঁস হয়েছে কি না, কতক্ষণ আগে ফাঁস হয়েছে, তার প্রভাবটা কী, কতজন ছাত্র-ছাত্রী এটির মধ্য দিয়ে প্রভাবিত হয়েছে, পরীক্ষা বাতিল করা হবে কি না, বাতিল করা হলে কতজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।
সচিব বলেন, যে প্রশ্ন পেয়েছে ৫-১০ মিনিট আগে। ওই প্রশ্ন পেয়ে তো বেশি প্রভাবের সুযোগ নেই। আবার দেখা গেছে, বেশ আগে ফাঁস হলেও ৫ বা ১০ হাজার ছেলে মেয়ে পেয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা দিয়েছে ২০ লাখ। এমন বিষয়গুলো হিসাব-নিকাশ করে প্রতিবেদন দেয়া হবে। আমাদের দায়িত্ব ফাঁস হওয়ার যে অভিযোগ এসেছে সেগুলো নিয়ে কাজ করা।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ আগে প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই ও মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হলেও গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ই-মেলে কমিটি গঠনের কাগজ পাঠানো হয়েছে। রোববার সে কাগজ পাওয়ায় পর এ কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।