প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক শিক্ষকের খোলা চিঠি

ডেস্ক,৩০ অক্টোবর:

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনে দাবি মেনে নিতে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষকরা। ১৩ নভেম্বরের মধ্যে সরকার দাবি মেনে না নিলে ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করবেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। এর পরও সরকার দাবি মেনে নিতে গড়িমসি করলে পরে ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষাও বর্জন করবেন শিক্ষকেরা। এতেও সরকারের টনক না নড়লে শিক্ষকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালা ঝুলানোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষক নেতারা।
শিক্ষকরা তাদের দাবির পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকার ধামরাইয়ের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক প্রধানমন্ত্রীর কাছে সমস্যা সমাধানে লিখেছেন খোলা চিঠি। সাইদুল ইসলাম নামে ঐ শিক্ষকের ফেসবুকে দেওয়া লেখাটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা আপা।

প্রথমে আমার সহস্র কদমবুচি নিবেন! আমি জানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আপনার নজরে আছে। পেটে ক্ষুধা থাকলে সে ছুটাছুটি করবে এটাই স্বাভাবিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আপনি মানবতার মা! আপনি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিন! শিক্ষকদের যেনো আর রাস্তায় নামতে না হয়! শিক্ষকেরা যেন বিদ্যালয়ে ফিরে যেতে পারে এবং পাঠাদানে মনোযোগী হয় সেই ব্যাবস্থা করে দিবেন আশাকরি!

নার্সরা যদি এইচএসসি পাশ করে ১০ম গ্রেড পেতে পারে কৃষিরা যদি এইচএসসি পাশ করে ১০ গ্রেড পায় তাহলে আমরা ডিগ্রিধারী শিক্ষকেরা কেন ১১ গ্রেড পাবো না!

একজন শিক্ষক অনার্স-মাস্টার্স পাশ করে ৯৭০০ টাকা বেতন পান সর্বসার্কুল্যে ১৬০০০ টাকা! এই ১৬ হাজার টাকা দিয়ে কিভাবে তার পরিবার কে চালাবেন?

একটি বাসা ভাড়া নিতে গেলে নূন্যতম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাগে। বাকি টাকা দিয়ে কি পরিবার চালানো সম্ভব? বাকি টাকা দিয়ে মাসের ১৫ দিন টেনেটুনে চলতে হয় এবং ১৫ দিন মুদির দোকানে ঋণ করে চলতে হয়। বর্তমানে এক কাপ চায়ের দাম ৫ টাকা সেখানে শিক্ষকের মাসিক টিফিন ভাতা ২০০ টাকা!

একটা ছেলে যখন অনার্স-মাস্টার্স পাশ করে চাকরিতে নিযুক্ত হয় তখন তার বাবা মা এবং তার পরিবার তার ওপরে অনেক আশা ভরসা করে! আমরা সেই হতভাগ্য শিক্ষক আমরা আমাদের বাবা মায়ের সেই আশাটুকু পূরণ করতে পারি না!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর! আপনি মানবতার মা! আপনি পারেন না এমন কিছুই নেই! আপনি চাইলে সবকিছু করতে পারেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি শুনেছি! আপনি একদিন এক বক্তব্যে বলেছিলেন,আওয়ামী লীগ মানে বিলাশ বহুল জীবন যাপন নয়!

আওয়ামী লীগ মানে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো!আমার বিশ্বাস আপনি এই অসহায় শিক্ষকদের ফিরিয়ে দেবেন না! আমার দীর্ঘ বিশ্বাস আপনি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষকদের সসম্মানে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে দেবেন। আর আমরা শিক্ষকেরা যেনো আপনাকে সারা বিশ্বের মধ্যে আবারও একবার মাদার অব হিউম্যানিটি উপহার দিতে পারি।আমার সামান্য কথাগুলো আপনি বিবেচনা করে দেখবেন।


Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।