প্রতিটি স্কুলে মিড-ডে মিল চালুর ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আsakh hasinaমি বুঝি না ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হতে শিশুকে কেন পরীক্ষা দিতে হবে? স্কুলে ভর্তি হওয়া শিশুদের অধিকার। একটি নির্দিষ্ট বয়স হয়ে গেলে শিশুরা স্কুলে ভর্তি হয়ে যাবে। তাদের ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এদিকে প্রত্যেকটি স্কুলে মিড-ডে মিল চালুর ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী ।

রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার  আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, শিশুকে যদি লিখতে পড়তে শিখেই স্কুলে ভর্তি হতে হয় তাহলে স্কুল কি পড়াবে?

দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত ও ১৬ কোটি মানুষকে মানবসম্পদে রূপান্তরের মাধ্যমে মানবপুঁজি হিসেবে গড়ে তোলারও আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।

সংশ্লিষ্টদের তিনি বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন-২০১৪ এর আলোকে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করুন, ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করুন। আপনাদের সকল কাজে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সর্বোচ্চ সমর্থন ও সহযোগিতার দ্বার অবারিত থাকবে।

দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের সরকার পরিচালনার সময়ে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ শতাংশে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত সাক্ষরতা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি নিরক্ষরকে সাক্ষরতা প্রদান করা হয়। ৭টি জেলাকে নিরক্ষরমুক্ত ঘোষণা করা হয়।

দেশে সাক্ষরতা বিস্তারে এ বিশাল অর্জনের সম্মানজনক স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ‘ইউনেস্কো সাক্ষরতা পুরস্কার ১৯৯৮’ লাভ করে।

২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা এ কার্যক্রম আবার চালু করি।

শিক্ষার উন্নয়নে তার সরকারের সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার জন্য শিক্ষা’ এবং সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি)  বাস্তবায়নে আমরা অত্যন্ত সফল। দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তরিত করে মানবপুঁজিতে উন্নীত করতে পারলে উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,  সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং সবার জন্য শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার ঘোষণা থাকলেও ২০১১ সালের মধ্যে বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী শতভাগ শিশুর বিদ্যালয়ে ভর্তি আমরা নিশ্চিত করেছি। প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ৩২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৩টি নতুন পাঠ্যবই বিতরণ করেছি।

পাশাপাশি প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরেপড়া রোধে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।  মিড-ডে মিল চালু করা হয়েছে।

পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি স্কুলে মিড-ডে মিল চালুর ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, অনুন্নত জনপদ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যূষিত ৫২টি জেলার ১শ’ ৪৮টি উপজেলায় আমরা ১ হাজার ১শ’ ৪০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২১ হাজার ৬শ’ ২৩টি ‘আনন্দ স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেছি। ফলে, হতদরিদ্র ও ঝরেপড়ার শঙ্কাগ্রস্ত শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির নিজস্ব বর্ণমালায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং সংশ্লিষ্ট ভাষা জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমরা দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য  ১ হাজার কোটি টাকার শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি।

নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন, দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে ৪শ’ ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ সাক্ষরতা কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিবন্ধীদের সক্ষমতা বিকাশে প্রতিবন্ধী স্কুল করেছি। পরীক্ষার ক্ষেত্রে তাদের আধা ঘন্টা সময় বাড়িয়ে দিয়েছি।

দিবসটি পালনের ৫০তম বর্ষপূর্তিতে এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘সাক্ষরতা আর দক্ষতা, টেকসই সমাজের মূলকথা’।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।