প্রতিটি স্কুলে প্রতিবন্ধী শিশুর শিক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে

প্রতিটি স্কুলে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা অর্জনের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে আর দশটা স্বাভাবিক শিশুর সঙ্গে মিশে তারা শিখতে পারে। সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে পারে।

আজ শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২৫তম আন্তর্জাতিক ও ১৮তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। সরকার সব প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষাব্যবস্থার আওতায় আনতে জীবন চক্রভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক, চিকিৎসা ও শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তাঘাট, ফুটপাত ও নতুন অবকাঠামো যেখানেই হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধীদের সহজে চলাচলের জন্য পৃথক লেন, এমনকি টয়লেট তৈরি করারও নির্দেশও আমাদের দেওয়া আছে এবং সেভাবেই আমরা তা করে যাচ্ছি।’

প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য পথ প্রশস্ত করতে করপোরেট সেক্টর, সমাজের বিত্তবান মানুষসহ সব শ্রেণি–পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অনেক বিত্তবানই আছেন, যাঁরা টাকা খরচের আর জায়গা পান না। আবার অনেকের ছেলেমেয়ে রয়েছে, যারা জীবনে চাওয়ার কিছুই না পেয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পথে চলে যায়। কাজেই সেই বিত্তবানদেরও আমি বলব, তাঁরা যদি এই ধরনের প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন, তাহলে সমাজ এতে উপকৃত হবে। নিজেরাও উপকার পাবেন এবং আল্লাহর দোয়াও পাবেন সবাই।’

পঁচাত্তরে পরিবারের সবাইকে ও সবকিছু হারানোর পরও দেশে ফিরে নিজেদের সম্পদ জনগণের, বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর-অবহেলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সবকিছু বিলিয়ে দিয়েছি।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বক্তব্য দেন।

সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. নুরুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি রজব আলী খান নজিব এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব জিল্লার রহমানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনটি ক্যাটাগরিতে নয় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মধ্যে ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানস্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে কথা বলে মিরপুর-১৪ নম্বর সেকশনে আট দিনব্যাপী প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত ‘প্রতিবন্ধী উত্তরণ মেলা’ উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের ফলে আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি। এমডিজি বাস্তবায়ন করেছি, এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। কাজেই বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধীরা আমাদের আপনজন, আমাদেরই সন্তান। কাজেই তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া, সমাজে তাদের একটা সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টি করা এবং তাদের আরও সুন্দরভাবে বাঁচার সুযোগ করে দেওয়া-এটাই আমাদের কর্তব্য।’

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।