স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে যেসব ভুল ধরা পড়েছে তা সরকারের ইচ্ছাকৃত ভুল বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। বলেছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে গভীর আলোচনা দরকার। কিন্তু সেটাতো করছি না। আজ বইয়ের ভুল তা নিয়ে লেখা হচ্ছে দিনের পর দিন। ভুল ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে। কারণ সরকার যে যে কাজ করতে চাইছে সেই কাজগুলো সফল করার জন্য শিক্ষা নিয়ে মনোযোগটা অন্যদিকে ডাইভার্ড করা দরকার। এর জন্য এই ভুল হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘টেক্স বুক বোর্ডের তিনজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। হয়তো তাদের কানে কানে বলে দিয়েছে তোমরা চিন্তা করো না, বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা পাবে। এক সময় তোমরা পদোন্নতি পাবে।’
শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ‘নাগরিক ভাবনা’র উপদেষ্টা প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক। নাগরিক ভাবনার আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
বছরের প্রথম দিন চার কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২০১ জন শিক্ষার্থীর হাতে এবার ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সরকার।
শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই যাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ভুল-ক্রটি ধরে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে। ভুলের খতিয়ান তুলে ধরে অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন- শিশুদের পাঠ্যবইয়ে এসব কী শেখানো হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কার দরকার। এর জন্য প্রথম পর্যায়ে দরকার সর্বজনীন কল্যাণে দূরদর্শী চিন্তা-ভাবনা, আলোচনা-সমালোচনা ও বিচার-বিবেচনা। প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণির পরিবর্তে পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করতে হবে। স্কুল থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের সার্টিফিকেট দেয়া হবে এবং এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থাকবে। ইংলিশ ভার্সন বিলুপ্ত করতে হবে। চাহিদা বিবেচনা করে সংখ্যা নির্ধারণ করে নির্দিষ্টসংখ্যক প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি এবং আরও কয়েকটি বিদেশি ভাষা ভালো করে শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক শিক্ষা নিয়ে ১০টি সুপারিশ তুলে ধরেন।
আলোচানা সভায় শিক্ষাবিদরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। এর মধ্যে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু, শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করা, শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা, ধর্মীয় বিষয় ও বিভিন্ন আইন পাঠ্যপুস্তকে রাখা উল্লেখযোগ্য।
ঢাকা টাইমস