নতুন মামলায় আটকা প্রাথমিকের এটিইও নিয়োগ কার্যক্রম

Image

সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) নিয়োগ নিয়ে নতুন করে দুটি রিট হওয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সম্প্রতি এ দুটি মামলার বিষয় জানিয়ে পিএসসিতে চিঠি পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, এটিইও নিয়োগের ক্ষেত্রে দুই বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। এ বিষয়ে আদালতে রিট করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘর তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পিএসসি। বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভাও করে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

আরো পড়ুন: পাঠ্যবইয়ে হিজড়া: শরীফ থেকে শরীফা হওয়ার গল্পে তুলকালাম

পিএসসি’র একটি সূত্র  জানিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে এটিইও নিয়োগের জটিলতা কেটেছে। নতুন কোনো মামলা হয়েছে কি না এ বিষয়ে জানতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সেই চিঠির জবাব দিয়েছে মন্ত্রণালয়। চিঠিতে নতুন করে দুটি মামলা থাকার কথা জানানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিএসসির এক কর্মকর্তা বলেন, এটিও নিয়োগ নিয়ে নতুন করে দুটি মামলা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের এমনটি জানিয়েছে। এই মামলা নিষ্পত্তি হলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন করে আবেদনগ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ  বলেন, নতুন করে দুটি মামলা হওয়ায় এটিও নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত মামলাগুলো নিষ্পত্তি করে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে। মামলার বিষয়টি পিএসসিকে অবহিত করে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া নতুন শিক্ষকরা এটিও পদে আবেদন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এক দফা জটিলতার নিরসন হলেও পরবর্তীতে ফের জটিলতা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায় থেকে মতামত পাওয়ায় এটিও পদে নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে সভা ডাকা হয়েছে।

সূত্র জানায়, এটিইও পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি গত ২৬ জুন প্রকাশ করে পিএসসি। বিজ্ঞপ্তিতে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষক (অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর) এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন বলে জানানো হয়। তবে বিজ্ঞপ্তির নিচে আবেদন নির্দেশিকায় বলা হয়- ‘এ পদে আবেদনের জন্য প্রাথমিকের শিক্ষকের কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে’।

পরবর্তীতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। গত ১৭ জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে পিএসসিকে চিঠি পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আব্দুল মালেক ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।

পিএসসিতে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮৫ (সংশোধিত ১৯৯৪), বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ২০১৫ ও ২০১৮ সালের একই পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরি নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ (বিশেষ বিধান) বিধিমালা, ২০০৩ যাচাই করে পিএসসির প্রকাশিত এটিইও পদে নিয়োগ যোগ্যতার শর্ত সংক্রান্ত জটিলতা অবসান ও বিজ্ঞপ্তি সংশোধনের প্রয়োজন হলে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠির প্রেক্ষিতে, আবেদন নির্দেশিকা থেকে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয় পিএসসি। ফলে বিভাগীয় কোটায় পূরণযোগ্য ১৫৯ পদে এটিইও নিয়োগে ১ জুলাই থেকে অনলাইনে যে আবেদন শুরু হয়েছিল তাতে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও আবেদন করার সুযোগ পান। ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ পদে আবেদন প্রক্রিয়া চলার কথা ছিল।

কিন্তু আবেদন চলাকালে ২৪ জুলাই আবারও নিয়মে পরিবর্তন আনে পিএসসি। আবেদনের শর্তে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘর যুক্ত করা হয়। এতে ফের জটিলতায় পড়েন নতুন শিক্ষকরা। শেষ পর্যন্ত এটিও পদে আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত করে পিএসসি। উচ্চপর্যায়ের মতামতের প্রেক্ষিতে সেই জটিলতা কাটলেও নতুন করে দুটি মামলা হওয়ায় ফের জটিলতা তৈরি হয়েছে। মামলা দুটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আবেদনগ্রহণ শুরু হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।