সম্পূর্ণ নিজের পরিকল্পনায় একটা অত্যাধুনিক পদ্ধতির বদলি প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য। দীর্ঘদিন যাবত চালু থাকা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়ার চাইতেও আধুনিক ও অধিকতরো গ্রহণযোগ্য এবং দুর্নীতির সুযোগরুদ্ধ নীতিমালা করা হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে (প্রভাষক, সহকারি শিক্ষক) নিয়োগের লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। বিগত সরকারগুলোর সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তিনটি শিক্ষা অধিদপ্তর ও এনটিআরসিএর নির্বাহী ও শীর্ষ কর্তাদের অদক্ষতা ও অবহেলায় বদলি প্রক্রিয়া চালু না হওয়ায় সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন লাখ লাখ এমপিও শিক্ষক।
এমন প্রেক্ষাপটে গত আগস্টে গঠিত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টার দায়িত্ব পান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার অন্যান্য দাবির সঙ্গে বদলির দাবিটাও তাঁর সামনে আনেন ভুক্তভোগীরা।
উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বদলির জন্য হাজার হাজার আবেদনকারীর মধ্যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্য ও যুক্তিসঙ্গত দাবিদারকে খুঁজে বের করতে কয়েকটা সূচক ঠিক করা হয়েছে। যেটা পুরোটাই সফটওয়্যারভিত্তিক।
বিগত সরকারের আমলে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুধু পারস্পরিক বদলির একটা নীতিমালা ও প্রজ্ঞাপন জারি এবং আবেদন শুরু হয়েছিলো। যেটা আমি গত ২ নভেম্বর থেকে সাময়িক স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছি।
তবে, সফটওয়্যারভিত্তিক যেটা সবার জন্য করা হচ্ছে সেটার মধ্যে পারস্পারিক বদলির সুবিধাটাও রাখা হবে। এই প্রক্রিয়ায় যদি ১ শতাংশ শিক্ষকও সুবিধা পান সেটাও তো ভালো।
শিক্ষা উপদেষ্টা আরো বলেন, ইনডেক্সধারী মাদরাসা শিক্ষক শূন্যপদে আবেদনের মাধ্যমে বদলি হয়ে সমপদে/সমস্কেলে স্কুলে যেতে পারতেন। স্কুল থেকে মাদরাসায়ও যেতে পারতেন, সেই সুবিধাও রাখা হবে। তবে, প্রজ্ঞাপনে বলা থাকবে মাদরাসা ও কারিগরি অধিদপ্তরও খুব শিগগিরই বদলির এমন প্রক্রিয়া চালু করবে।
তিনি বলেন, বদলিপ্রত্যাশী এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে তিনটি গ্রুপ বিদ্যমান। যুগ যুগ ধরে চলে আসা শুধু বেসরকারি পরিচালনা কমিটির নেওয়া নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরাসরি নিয়োগ ও এমপিওভুক্ত। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মার্চের পর এনটিআরসিএর প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণী সনদ দেখিয়ে নিয়োগের জন্য আবেদন করে বেসরকারি কমিটির নেওয়া নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ ও এমপিওভুক্ত হওয়া। এবং ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে গেজেট জারি করে শুধু এনটিআরসিএকে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষমতা দেওয়া ও ভাইভা যুক্তসহ পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার পর এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগ সুপারিশকৃত। বদলির সফটওয়্যার এমনভাবে করা হচেছ যেন আবেদন করামাত্রই একজন বদলিপ্রত্যাশীর সব তথ্য জানা যায় এবং সূচক দিয়ে সর্বোচ্চ যুক্তিসঙ্গতকে চিহ্নিত করা যায়।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, নারী শিক্ষকদের অগ্রাধিকার থাকবে। তারপর জেলা ও সিনিয়রিটি। মেধার বিষয়টিও থাকতে পারে। খুব শিগগিরিই নীতিমালা জারি হবে।