নিজস্ব প্রতিবেদক,১৯ অক্টোবর ২০২১ঃ
বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫৪ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এনটিআরসিএ। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ২৮৬ জনকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ করা হয়।
১৫ হাজার ৩২৫টি পদে আবেদন না পাওয়ায় নিয়োগ সুপারিশ করা হয়নি। পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণের নির্দেশনা দেওয়ার পর ৬ হাজার সুপারিশ পাওয়া প্রার্থী ফরম পূরণ করে পাঠননি। ৩২ হাজার ২৮৩ জন প্রার্থীর ফরম পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতোমধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নতুন করে সুপারিশ পাওয়ায় যোগ দিতে চাচ্ছেন না। সে হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ৫৪ হাজার শূন্যপদে নিয়োগে উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রায় ২২ হাজার পদ শূন্যই থাকছে। এমন পরিস্থিতিতে ৩য় চক্রে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপে প্রার্থীদের সুপারিশের চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে এনটিআরসিএ।
আরো পড়ুনঃ এ বছর হচ্ছে না প্রাথমিক সমাপনী
এদিকে শিক্ষক হতে আবেদন করেও সুপারিশ না পাওয়া প্রার্থীরা দ্বিতীয় ধাপে সুপারিশ করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে শিক্ষক সংকট কিছুটা কাটানো যাবে, প্রার্থীরাও বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবেন।
প্রচলিত নিয়মে কোনো শিক্ষক পদে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থী যোগদান না করলে সেই পদে আবেদন করা মেধাতালিকার ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়। ২য় নিয়োগ চক্রে সুপারিশ পেয়েও যোগদান না করা প্রার্থীদের পদেও দ্বিতীয় ধাপে সুপারিশ করা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরের শেষ দিকে সেই নিয়োগচক্রে যোগদান না করা পদগুলোতে প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছিল।
এদিকে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় ধাপের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে, এ জন্য প্রার্থীদের যোগদান করতে হবে। যদিও সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন এখনো শুরু হয়নি। পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর সুপারিশপত্র প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীরা সুপারিশপত্র নিয়ে যোগদান করার পর তা ওয়েবসাইটে এন্ট্রি করা হবে। তখন জানা যাবে কোন কোন পদে সুপারিশ পাওয়ার পরও যোগদান করেননি প্রার্থীরা।
শিক্ষক নিয়োগে আবেদন করেও সুপারিশ না পাওয়া প্রার্থীরা দ্বিতীয় ধাপে শিক্ষক পদে সুপারিশ করার দাবি জানিয়ে বলছেন, বেকার অবস্থাতেও ধার-দেনা করে তারা আবেদন করেছেন। অনেকে শতাধিক আবেদন করেছেন। কিন্তু সুপারিশ পাননি। অনেক ইনডেক্সধারী শিক্ষক নিয়ম অনুযায়ী সুপারিশ পেয়েছেন, কিন্তু তারা যোগদান করবেন না। ৬ হাজার প্রার্থী সুপারিশ পেয়েও ফরম পূরণ করে পাঠাননি। এ পদগুলো খালিই থাকবে। আমরা চাই, এ পদগুলোতে হলেও নতুন করে প্রার্থীদের সুপারিশ করা হোক।
তারা আরও বলেন, ২য় নিয়োগ চক্রেও দ্বিতীয় ধাপে নিয়োগ সুপারিশ করা হয়। তখন এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলেছিলেন দ্বিতীয় ধাপে সুপারিশ হবে না। কিন্তু পরে বেশ কয়েকমাস পরে দ্বিতীয় ধাপের সুপারিশ করা হয় প্রার্থীদের।
এদিকে তৃতীয় ধাপে শিক্ষক নিয়োগ চক্রে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী প্রার্থীরা আদালতের রায় অনুসারে আবেদন করার সুযোগ পেয়েছিলেন। পরবর্তী শিক্ষক নিয়োগ চক্রে তারা আবেদন করতে পারবেন কি না তাও জানেন না তারা। এইচ এম রুহুল আমিন রুবেল নামের এক প্রার্থী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা পয়োত্রিশোর্ধ্বরা আগামী শিক্ষক নিয়োগের আবেদনের সুযোগ পাবো কি না জানি না। শিক্ষক হতে আবেদনের সুযোগ পেয়ে বেশকিছু পদে আবেদন করেছি। কিন্তু সুপারিশ পাইনি। আমরা আগের নিয়োগ চক্রের মত দ্বিতীয় ধাপের সুপারিশ চাই। এতে কিছুটা হলেও শিক্ষক সংকট কাটবে।
প্রার্থীদের দ্বিতীয় ধাপের সুপারিশ করা হবে কি না তা নিয়ে সম্প্রতি এনটিআরসিএর বোর্ড সভায় আলোচনা হয়েছে বলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। তবে এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রার্থীদের দ্বিতীয় ধাপের সুপারিশ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে এনটিআরসিএর সচিব ওবায়দুর রহমান গত বুধবার দুপুরে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রার্থীদের দ্বিতীয় ধাপের সুপারিশ করা হবে কি না বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যেসব প্রার্থীরা আবেদন করেছিলেন তাদের সুবিধার কথা আমরা মাথায় রাখছি। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সুপারিশপ্রাপ্ত ৬ হাজার প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম আমরা পাইনি। তারা যোগদান করবেন কি করবে না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে, আমরা প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশ ফরম পাঠানোর ফের সুযোগ দিতে চাচ্ছি। এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে।